নিত্য নতুন এক একটি ভ্যাকসিনের শিরোনাম যেমন একদিকে করোনা মহামারির অন্ধকার দিনগুলি শেষ হতে পারে বলে আশা জাগিয়ে তুলছে, তেমনই বর্তমান সময়ে ভাইরাসটির দ্বিতীয় ঢেউ ইউরোপের অঞ্চলগুলোতে সংক্রমণের হার কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধটি যেহেতু একটি নতুন পর্বে প্রবেশ করেছে, তাই এই যুদ্ধ মোকাবেলায় অভিবাসীদের বিষয়টি যেন গুরুত্ব দেওয়া হয় সে ব্যাপারে সব দেশের সরকার প্রধানদের প্রতি জরুরি আহ্বান জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)।
উত্তর মেসিডোনিয়ার রাজধানী থেকে আয়োজিত দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ স্বাস্থ্য নেটওয়ার্কের (এসইইএইচএন) চলতি সপ্তাহের সভায় উঠে এসেছে যে, প্রখর শৈত্য আবহাওয়া ও মৌসুমি ফ্লুর সংমিশ্রণ স্বাস্থ্যসেবা খাতকে আরো চাপের মুখে ফেলবে। আইওএমের সিনিয়র রিজিওনাল হেলথ অ্যাডভাইজার ডা: জাইম ক্যাল্ডারন তার ভাষণে ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, এই অঞ্চলে কয়েক হাজার অভিবাসীর জন্যে এটি একটি খারাপ সংবাদ। ভাষা এবং সংস্কৃতিগত বাধা, উচ্চমূল্যের ফি এবং অনুপোযুক্ত স্বাস্থ্যনীতির কারণে অভিবাসীরা প্রায়শই স্বাস্থ্যসেবা পেতে বাধার সম্মুখীন হন।
(এসইইএইচএন) হলো আলবেনিয়া, বসনিয়া ও হার্জিগোভিনা, বুলগেরিয়া, মন্টিনিগ্রো, মলদোভা প্রজাতন্ত্র, রোমানিয়া, সার্বিয়া এবং উত্তর মেসিডোনিয়ার সরকারের সঙ্গে সংযুক্ত রাজনৈতিক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি নেটওয়ার্ক। এসব দেশের প্রত্যেকটিই অভিবাসীদের উৎস দেশ এবং এগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে অভিবাসনের ট্রানজিট দেশ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। মহামারীজনিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও গত বছরের মতো এ বছরও প্রায় ৩০ হাজার অভিবাসী অনিয়মিতভাবে এইসব অঞ্চল পাড়ি দিয়েছে। বর্তমানে এই সংখ্যা বসনিয়া ও হার্জিগোভিনায় প্রায় ১২ হাজার ৫০০ এবং সার্বিয়ায় ৭ হাজার ১০০।
ডা: জাইম ক্যাল্ডারন জনগণের স্বাস্থ্যসেবা ও ভ্যাকসিনেশন পরিকল্পনায় অভিবাসীদের অন্তভূর্ক্ত করার জন্য সরকার প্রধানদের অনুরোধ করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রাদুর্ভাব রোধ, বিশ্ব সম্প্রদায়কে সুরক্ষিত ও স্বাস্থ্যকর রাখতে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল সরঞ্জামগুলোর মধ্যে রয়েছে ভ্যাকসিন।’ ‘প্রত্যেকের সমৃদ্ধির জন্য, নিয়মিত-অনিয়মিত নির্বিশেষে প্রত্যেক অভিবাসীর জন্য, যাতে কেউ জীবনরক্ষাকারী ভ্যাকসিন প্রাপ্তিতে পেছনে না থেকে যায়, সেই লক্ষ্যে দেশগুলিকে অবশ্যই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।