শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী যুবলীগ নেতা আনিসের তাণ্ডব এখনো থামেনি!

0
216

নাম তার আনিস রহমান। তিনি শহর যশোর যুবলীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু মানব কল্যাণ পরিষদ যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। তিনি হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীদের ওপর; আঘাত করে রক্তাক্ত করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামিল হওয়া শিক্ষার্থীদেরকে। গত ১৫ জুলাই যশোর আদালত প্রাঙ্গণের ভেতর শিক্ষার্থীদের ওপর তার হামলার ভিডিও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও প্রচার করা হয়েছে।

এতেও থেমে থাকেনি তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম; আওয়ামীলীগ আয়োজিত বিভিন্ন মিছিল, সভা ও সমাবেশে গণআন্দোলনবিরোধী বক্তৃতা দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে তিনি রাজাকার, আল বদর, জঙ্গী, পাকিস্তানি পেতাত্মা, দালাল, লুটপাটকারী বলে অভিহিত করেছেন। আনিস রহমানের ফেসবুক পেইজে ঢুকলেই দেখা মেলে, ছাত্র—জনতার মাধ্যমে সংগঠিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে তার করা অজস্র পোস্ট।
স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর যশোরবাসী মনে করেছিলো, এখানেই হয়তো থেমে যাবে আনিস রহমানের সন্ত্রাসী অপতৎপরতামূলক কর্মকাণ্ড। কিন্তু অবাক হলেও সত্য যে, শহর যশোর যুবলীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু মানব কল্যাণ পরিষদ যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আনিস রহমান নামের ভয়ংকর এই সন্ত্রাসী এখনও প্রশাসনের নাকের ডগায় আগের মতোই প্রচণ্ড দাপটে একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এখনো আনিস রহমান নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন যশোর আইটি পার্কের বিশাল পুকুরসহ অনেক স্থাপনা। এমনকি স্বশরীরে এখনো প্রকাশ্যে দখলকৃত এসব জায়গা তদারকি করছেন। এছাড়া পাসপোর্ট অফিসকেন্দ্রিক সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য এই আনিস রহমান। পাসপোর্ট সংক্রান্ত দোকানপাটও রয়েছে তার নিয়ন্ত্রণে।
অথচ যশোর কোতয়ালি থানা থেকে নাজির শংকরপুর, সাদেক দারোগার মোড় পর্যন্ত তার বাসার দূরত্ব ২ কি.মি. এর মধ্যে হওয়ার পরও এখনো তাকে গ্রেফতার না করতে পারায় পুলিশের কার্যক্রমের ওপর বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, হাসিনা সরকারের পতনের পরও কীভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো এই সন্ত্রাসী এখনো এলাকায় বহাল তবিয়তে ঘোরাফেরা করছে। তারা বলছেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর সব এলাকায় আওয়ামী—সন্ত্রাস মুক্ত হয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করলেও, আনিস রহমানের প্রকাশ্য চলাফেরা তাদের ভেতর এখনো ভীতির সঞ্চার করছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত বেশ কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, হাসিনা সরকারের পতনের পরও আনিস রহমান সাধারণ শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের হুমকি—ধামকি দিয়ে তাদের ওপর চড়াও হচ্ছেন।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, অন্যের জমি ও ঘের পুকুর দখলের অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ গতকাল যশোর কোতয়ালি থানায় ভাইপো সাইদ ও শাওন ‘অপহরনের পর গুম’ করার অভিযোগে সাবেক এসপিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার অন্যতম আসামী হিসেবেও নাম রয়েছে যশোর যুবলীগের এই সদস্যের বিরুদ্ধে।
এরই মধ্যে আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে বলে যশোর কোতয়ালি থানার দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র : নিজস্ব প্রতিবেদক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here