জলবায়ু অভিবাসনের হটস্পট হতে যাচ্ছে ঢাকা!

0
858
জলবায়ু অভিবাসন

বিশ্বব্যাংকের এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ২০৫০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল অঞ্চলে ২১ কোটি ৬০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যূত করবে। আর ২০৩০ সালের মধ্যে যেসব শহর জলবায়ু অভিবাসনের হটস্পট হয়ে উঠতে পারে তার মধ্যে ঢাকা অন্যতম।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিকভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং সুপেয় পানির অভাবে মানুষ তাদের নিজ দেশের মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অর্থনৈতিক সুযোগের আরো নির্ভরযোগ্য উৎসের সন্ধানে এক শহর থেকে অন্য শহরে স্থানান্তরিত হবে।

জলবায়ু অভিবাসন হটস্পট কী

প্রতিবেদনটিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, ২০৩০ সালের প্রথম দিকে ঢাকা ছাড়াও কায়রো, হ্যানয় ও তাশখন্দের মতো শহর জলবায়ু অভিবাসনের হটস্পট হয়ে উঠতে পারে। সাম্প্রতিক এই প্রতিবেদনটিতে মূলত উত্তর আফ্রিকা, পূর্ব এশিয়া এবং মধ্য এশিয়া অঞ্চলকে সতর্কতা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে সাব-সাহারান আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা এবং দক্ষিণ এশিয়াকে কেন্দ্র করে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এই নথি তৈরি করা হয়।

গবেষণাকৃত ছয়টি অঞ্চলের মধ্যে, সাব-সাহারান আফ্রিকা ৮৫.৭ মিলিয়ন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ অভিবাসীদের সর্বাধিক সংখ্যক সংখ্যা দেখতে পাবে। এছাড়াও উত্তর আফ্রিকা, এমন একটি অঞ্চল যেখানে ইতোমধ্যে দীর্ঘকাল ধরে পানি সংকট বিদ্যমান। ধারণা করা হচ্ছে, এই অঞ্চলের জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে এখানকার ৯ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যূত হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ঢাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।

জলবায়ু অভিযোজন কৌশল হিসাবে স্থানান্তর

প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, গ্রীনহাউস গ্যাস কমানোর পদক্ষেপের জন্য অভিবাসনের ঝুঁকি অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল। যেমন, আগস্ট মাসে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেলের প্রতিবেদনটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, যে পরিমাণ উষ্ণতা রোধ করা যায় তার প্রতিটি ভগ্নাংশ বিশ্বব্যাপী সমাজ ও অর্থনীতির জলবায়ু পরিবর্তনের অভিজ্ঞতাকে ব্যাপক পরিবর্তন করবে।

যাই হোক না কেন, অভ্যন্তরীণ অভিবাসন সবসময়ই নেতিবাচক নাও হতে পারে। অভ্যন্তরীণ অভিবাসন যদি মানুষকে ক্ষতিকর জলবায়ুর প্রভাব এড়াতে সাহায্য করে, তাহলে এটিকে জলবায়ু অভিযোজনের কৌশল হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। কয়েক দশক ধরে চলমান ক্রমবর্ধমান নগরায়ন এটাই স্পষ্ট করছে যে, স্বাভাবিক নিয়মে মানুষ স্থানন্তরিত হবেই।

তবে বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে যে চ্যালেঞ্জটি তুলে ধরা হয়েছে তা হল – গন্তব্যস্থলগুলির প্রস্তুতি নিশ্চিত করা। অর্থাৎ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধার ক্ষেত্র তৈরি করা।

তবে ইতোমধ্যেই বসবাসের অযোগ্য শহর হিসেবে শীর্ষস্থানে অবস্থান করা ঢাকা, কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করবে তা নিয়ে আশংকা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here