২০১৮ সালে ১০১ জন অভিবাসীকে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধারের পর লিবিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে তুলে দেয়ার অপরাধে একটি জাহাজের ক্যাপ্টেনকে এক বছরের সাজা দিয়েছে ইতালির একটি আদালত। ইতালির আদালতে এধরনের মামলার ঘটনা নজিরবিহীন।
মামলায় জেসাপি সতগে নামের এ ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এই আইনে স্পষ্ট করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে যে, যেসব দেশে মানুষ নিজেদের ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে, সেসব দেশে জোর করে তাদের প্রত্যাবাসন করা যাবে না।
২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সংগঠিত ওই উদ্ধার অভিযানে ইতালির পতাকাবাহী ‘দ্য আসো ২৮’ নামের একটি তেল সরবরাহকারী জাহাজ অংশ নিয়েছিল। আন্তর্জাতিক জলসীমায় অকেজো নৌকা থেকে সেসময় পাঁচ জন গর্ভবতী নারী ও পাঁচটি শিশুসহ ১০১ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করে জাহাজটি। এরপর জাহাজ কর্তৃপক্ষ উদ্ধার হওয়া এসব অভিবাসীকে ত্রিপোলি বন্দরে লিবিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে তুলে দিয়েছিল।
এদিকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরাকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, ইতালির আদালতের দেয়া এ রায় একটি ‘সঠিক পদক্ষেপ’। অবশ্য রায়টি একজন ব্যক্তিকে শাস্তি দিলেও তা লিবিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাষ্ট্রগুলির দায়িত্বের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে।
জার্মানিভিত্তিক বেসরকারি সংগঠন সিওয়াচ এর ইতালির মুখপাত্র জর্জিয়া লিনার্ডি আল জাজিরাকে বলেন- ‘যদি আপনি একজন ব্যক্তিকে লিবিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে অভিবাসীদের হস্তান্তর করার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেন, তাহলে আপনি আসলে সেই কর্তৃপক্ষের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন।’
অভিবাসীদের ঢল ঠেকাতে লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইতালি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চলতি বছরের জুলাইয়ে লিবিয়ার কর্তৃপক্ষ অভিবাসী বোঝাই একটি নৌকাকে পেছন থেকে ধাওয়া করেছিল। এসময় তাদের ওপর গুলি চালানোর দৃশ্য ভিডিও করেছিল সিওয়াচ এর সদস্যরা। সংগঠনটির ভাষ্য, ভুমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ ঠেকানোর একটি স্পষ্ট তৎপরতা হিসেবে দেখা যেতে পারে এ ঘটনাটিকে।
এদিকে লিনার্ডি আদালতের এ রায়ের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করলেও ঘটনার মূল হোতাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বলেছেন, ‘ক্যাপ্টেনকে সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্তটি সঠিক কিন্তু যারা তাকে এই আদেশ দিয়েছিল, তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিৎ।
সূত্র: আল জাজিরা