আমেরিকার নর্থ ক্যারোলিনার রালিই শহরের জরুরি তালিকাভূক্ত নয় এমন সব ভবনের আলো রাত ১১ টা থেকে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ। অভিবাসী পাখিদের স্থানান্তরে সহায়তার জন্য নভেম্বর নাগাদ প্রতিদিন রাত ১১ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত এই নিয়ম কার্যকর থাকবে।
বার্ডিং গ্রুপস এবং আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় দেখা গেছে যে, রাতে আলো নিভিয়ে রাখলে পাখিদের যাত্রাপথে ভবনের সঙ্গে সংঘর্ষের হার অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
পরিযায়ী পাখিরা যাত্রাপথে রালিই এর মতো বড় শহরগুলির আশেপাশে উড়ে যায় এবং উজ্জ্বল আলোযুক্ত ভবনগুলি পাখিদের নীচের দিকে আকৃষ্ট করে, যার ফলে ভবনের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে, যা প্রায়শই মারাত্মক হয়ে ওঠে।
অন্ধকার, মেঘাচ্ছন্ন এবং সামগ্রিক খারাপ আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে পাখিদের জন্য সঠিক পথে উড়ে যাওয়া কঠিনই বটে।
শীতের মৌসুমে নর্থ ক্যারোলিনা থেকে দক্ষিণে ভ্রমণকারী এক ধরনের পাখিরা বেশ সুরেলা শব্দে গান গাইতে থাকে। নর্থ ক্যারোলিনার পথচারীদের কাছে এরা – বনের গায়কী হিসেবে পরিচিত।
এসব বনের গায়ক পাখি এবং অন্যান্য অনেক গানের পাখিরা, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা পর্যন্ত বিচরণ করে থাকে।
এনসি অডুবন সোসাইটি ও কিম ব্র্যান্ড বলেন, শরতে স্থানান্তরের জন্য পাখিরা প্রায়ই রাতে উড়ে যায় এবং বসন্তে ফিরে আসে। এসময় অনেক সংখ্যক পাখি মারা যায়।
আরো পড়ুন বিমানের আঘাতে অভিবাসী পাখির মৃত্যুহার বেড়েছে
‘গবেষণায় অনুমান করা হয় যে, প্রতিবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক বিলিয়ন পাখি ভবনের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে মারা যায়, ‘ব্র্যান্ড বলেন, পাখিদের তাদের যাত্রায় নিরাপদ রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ‘আমাদের অনেক পরিযায়ী গানের পাখির মতো, ৫০ বছর আগে যতসংখ্যক বনের গায়কী পাখি ছিল এখন তার সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।’
ব্র্যান্ড বলেন, রালিই রাজ্যের প্রথম প্রধান শহর যা এই উড়ন্ত বন্ধুদের নিরাপদ যাত্রা প্রদানের জন্য ‘আলো নেভানো’ উদ্যোগের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলি আংশিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং শার্লট ও উইনস্টন-সালেমের কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভবন রাতে আলো নিভিয়ে দিচ্ছে।
শিকাগো এবং নিউইয়র্ক সিটির মতো বড় শহরগুলিতে অধিক অভিবাসনের মৌসুমে এই ধরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
শহরের কর্মকর্তারা ওয়েক অডুবন সোসাইটির সদস্যদের সঙ্গে কাজ করে পরিকল্পনাটি বাস্তবে রূপান্তরিত করেন। গত সপ্তাহে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
সূত্র: নর্থ ক্যারোলিনা পাবলিক রেডিও