মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণার পর থেকে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান। তালেবানরা এরই মধ্যে দখল করে নিয়েছে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঞ্চল।
সরকারী বাহিনীর সঙ্গে তালেবানদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ প্রতিদিনই নতুন নতুন আশঙ্কার সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতিতে গত জানুয়ারি থেকে নতুন করে ঘরবাড়ি ছেড়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার আফগান অধিবাসী বাস্তুচ্যূতির শিকার হয়েছেন। এছাড়া গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণভাবেই দেশটিতে ৩ দশমিক ৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস্তুুচ্যূত হয়েছে।
তালেবানদের বিরুদ্ধে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধে দেশটির ৩৮ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে কমপক্ষে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন মাতৃভূমি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। শরণার্থী হয়ে তারা পার্শ্ববর্তী পাকিস্তান, ইরানসহ আশপাশের দেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাস্তুচ্যূতির শিকার হওয়া মোট নিবন্ধিত আফগান শরণার্থীদের সংখ্যা দুই মিলিয়নেরও বেশি, যার প্রায় ৯০ শতাংশই আশ্রয় নিয়েছে ইরান ও পাকিস্তানে। অবশ্য শুরু থেকেই এই দুই দেশ আফগান শরণার্থীদের আশ্রয়, নিরাপত্তা, খাদ্য ও চিকিৎসা সেবার দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়ে আসছে।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, এর বাইরে আরো প্রায় ৪ মিলিয়ন মানুষ অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যূতির শিকার হয়েছে। ইউএনএইচসিআর বলছে, দীর্ঘ সময় ধরে চলমান সংঘাত, উচ্চমাত্রায় বাস্তুচ্যূতি, কোভিড-১৯ এর ছোবল, খরাসহ নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশটির দারিদ্র্যসীমা আরো বেড়ে যাওয়ায় আফগান জনগণের সংকট চরমে পৌঁছেছে।
আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশই শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠী। তালেবান ও সরকারের মধ্যকার শান্তি চুক্তি ব্যর্থ হলে দেশটিতে আরো ব্যাপকমাত্রায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। শুধু তাই নয়, আফগানিস্তানের এ সংকট পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও নেতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে আশঙ্কা তাদের।