ওমান থেকে জাহাজে করে সৌদি আরবে যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের হাতে আটক পাঁচ বাংলাদেশী নাবিক অবশেষে দেশে ফিরলেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ৭ টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা দেশে ফেরেন।
বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহায়তায় তাদের জরুরী সহায়তা দেয় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। দেশে ফেরা এই ৫ জন হলেন, মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, রহিম উদ্দিন, মোহাম্মদ ইউসুফ, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ আলমগীর। পাঁচজনের বাড়িই চট্টগ্রামে। দেশে ফিরে তারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এবং তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান জানান, গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ওমান থেকে সৌদি আরবে যাচ্ছিল তিনটি জাহাজ। হঠাৎ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ঝড়ের কবলে পড়ে একটি জাহাজ ইয়েমেন সাগরে ডুবে যায়। এমতাবস্থায় বাকি ২টি জাহাজের মাধ্যমে প্রাণে রক্ষা পেয়ে তারা ইয়েমেনের বন্দরে নেমে আশ্রয় প্রার্থনা করলে হুতি বিদ্রোহীরা তাদের আটক করে। সেখানে তারা খাবারসহ নানা সংকেটে মানবিক দিন কাটান। পরে দেশে থাকা তাদের পরিবারের সদস্যরা জুন মাসে তাদের উদ্ধারের জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করে। বিষয়টি নিয়ে এ বছরের জুলাই মাসে বেসরকারি একটি টেলিভিশনে সংবাদ প্রচারিত হয়। পরে আটক বাংলাদেশীরা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করে। ইতিমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি সর্ম্পকে অবহিত হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, তারা বিষয়টি কুয়েত, ওমান ও জর্ডানের বাংলাদেশ দূতাবাসকে অবহিত করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়। এই পাঁচ বাংলাদেশীদের সঙ্গে ভারতীয় ১৪ জন নাবিকও বন্দি ছিলেন। ভারত সরকারও এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়। ২৮ নভেম্বর হুতি বিদ্রোহীরা তাদের মুক্তি দিলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওওম) হেফাজতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে গতকাল তাদের ঢাকা পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইয়েমেন থেকে দুবাই হয়ে বিজি ৪৮ ফ্লাইটে তারা আজ রোববার সকালে ঢাকায় ফিরে আসে।
এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানের জেল থেকে দেশে ফেরেন আরও আট বাংলাদেশী। ২০১৯ সালের মে মাসে ওমান সংলগ্ন আরব সাগরে মাছ ধরার সময় তাদের ফিশিং বোট স্রোতের টানে পাকিস্তানের জলসীমায় ঢুকে পড়ে। এরপর পাকিস্তানী কোস্ট গার্ড তাদের আটক করে। পরে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।