মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে সৌদি আরব থেকে ফিরলেন আরেক নারী

0
985

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাফেরার করছিলো এক নারী। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তারা ওই নারীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি কোন কিছুর সদুত্তর দিতে পারছিলেন না।

হাতে থাকা কাগজপত্র দেখে বোঝা গেল, ওই নারীর নাম আসিয়া বেগম। সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০২ ফ্লাইটে শুক্রবার রাত সোয়া একটায় তিনি ঢাকায় এসেছেন। এরপর বিমানবন্দর থেকে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় বিমানবন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে দেখভালের জন্য আসিয়াকে হস্তান্তর করা হয় ব্র্যাকের কাছে।

ব্র্যাকের সাইকো সোসাল কাউন্সিলর আসিয়া বেগমের (৩৫) সঙ্গে কথা বলে তাকে মানসিক সেবা দেন। এরপর পাসপোর্ট দেখে ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, আসিয়ার বাড়ি নওগাঁয়। ২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে রিক্রটিং এজেন্সি এম/এস ম্যাক্সিম ট্রেড অ্যান্ড কো (আরএল-৮০৯) তাকে সৌদি আরবের জেদ্দা পাঠায়।

আসিয়ার স্বজনরা বলছেন, প্রথম ছয় মাস কিছুটা ভালো থাকলেও পরবর্তীতে নিয়োগকর্তা নিপীড়ন করতো। কিন্তু এক পর‌্যায়ে পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে তারা জানতে পারেন আসিয়া সৌদিতে তিন মাস জেলখানায় ছিলেন। সেখান থেকে ট্রাভেল পাশের মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান জানান, আসিয়ার মতো পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেক নারীই দেশে ফিরছে। তবে তাদের সংখ্যা সঠিক করে বলা সম্ভব নয়। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক ও পুলিশ মাছে মধ্যেই এমন নারীদের বিমানবন্দরে পেয়ে আমাদের জানায়। গত দুই বছরে ৬৮ জন মানসিক ভারসাম্যহীনভাবে ফেরত আসা অভিবাসীকে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সাইকো সোসাল কাউন্সিলরদের মাধ্যমে যথাযথ সেবা দিয়ে নিরাপদে পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এই ৬৮ জনের মধ্যে ৬১ জনই নারী গৃহকর্মী এবং ৭ জন পুরুষ।

শুধু যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফিরছে তাই নয়, গত পাঁচ বছরে প্রায় ৫০০ নারীর মরদেহ দেশে ফিরেছে বিভিন্ন দেশ থেকে। এর মধ্যে অন্তত ২০০ জনেরই মরদেহ এসেছে সৌদি আরব থেকে যার মধ্যে প্রায় ৬০ জনই আত্মহত্যা করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here