‘আমি প্রবাসী’ তথ্যসেবাকে বিদেশগামীদের কাছে পৌঁছে দেবে ব্র্যাক

0
915

বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সেবা আরও সহজ ও ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে ‘আমি প্রবাসী (Ami Probashi)’ নামের একটি অ্যাপ চালু করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বাংলা ট্র্যাক গ্রুপ। এই অ্যাপটিকে বিদেশগামীদের কাছে পৌঁছে দেবে ব্র্যাক।

প্রবাসীদের তথ্যসেবা দিতে এই অ্যাপটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এবং বাংলা ট্র্যাকের মধ্যে একটি সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুন) ব্র্যাকের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং বাংলা ট্র্যাকের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নামির আহমেদ এতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় বাংলা ট্র্যাকের চিফ অপারেটিং অফিসার সামিউল ইসলাম, ব্যবসায়িক প্রধান তানভীর সিদ্দিক ও ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৮ই মে ‘আমি প্রবাসী’ নামের অ্যাপটির উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। অনুষ্ঠানে বাংলা ট্র্যাক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক একরামুল হক জানান, যে কোনো বিদেশগামী নিজের মোবাইল নম্বর কিংবা ইমেইল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করেই এই অ্যাপের সেবা নিতে পারবেন। মাত্র পাঁচটি ধাপে সম্পন্ন করা যায় রেজিস্ট্রেশন।

চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে আগ্রহীরা অনলাইনে নিবন্ধন, বিদেশে চাকরি খুঁজে আবেদনের সুযোগ, অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি, পাসপোর্ট অফিস ও মেডিকেল সেন্টারসমূহের তালিকা, বিদেশযাত্রার ধাপসমূহ ও দেশভিত্তিক নিয়মাবলী সম্পর্কে সহজে তথ্য পাবেন ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে। এই অ্যাপ সম্পর্কে বিদেশগামীদের অবহিত করা ও সেবাসমূহ প্রান্তিক জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করবে ব্র্যাক ।

অনুষ্ঠানে আসিফ সালেহ বলেন, সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে অভিবাসী কর্মীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হন। প্রতারিত হন নানাভাবে। আমরা বিদেশগামীদের সচেতন ও দক্ষ করে বিদেশে পাঠানোর জন্য অনেকদিন ধরে কাজ করছি। এই অ্যাপটি ব্যবহার করে প্রবাসীরা সঠিক তথ্য পাবেন। অভিবাসীদের কাছে অ্যাপটির যথাযথ ব্যবহার ও সেবাগুলো নিশ্চিত করতে কাজ করবে ব্র্যাক।

বাংলা ট্র্যাকের পরিচালক নামির আহমেদ বলেন, এই অ্যাপে বৈধভাবে বিদেশযাত্রার সকল ধাপের বর্ণনা আছে। পাশাপাশি নিজের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পাসপোর্টের কপি, চাকরির অনুমতিমত্র এবং জাতীয় পরিচয়পত্র স্ক্যান করে সংরক্ষণের সুবিধাও আছে। কোথাও কোনো সমস্যায় পড়লে কোন দেশে কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে তার বিস্তারিত তথ্য ও ইমেইল ঠিকানাও পাওয়া যাবে এই অ্যাপে। আমরা আশা করছি ব্র্যাকের মাধ্যমে আমরা অ্যাপটিকে কাযর্কর করতে পারব।

প্লে স্টোর থেকে যে কেউ ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপটি ডাউনলোড করতে পারবেন। এরপর চালু করে বাংলা কিংবা ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করতে হবে। মোবাইল নম্বর কিংবা ইমেইল আইডি উল্লেখ করতে হবে। ফোন নম্বর দেওয়া হলে মোবাইলে তাৎক্ষণিক একটি কোড আসবে। সেটি অ্যাপে প্রবেশ করানোর পর কমপক্ষে ৩টি দেশ নির্বাচন করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যসহ ২৩টি দেশের কথা সেখানে উল্লেখ করা থাকলেও ‘অন্যান্য দেশসমূহ’ নামের সেকশনে প্রবেশ করলে আরও তালিকা পাওয়া যাবে।

এই ধাপের পর আসবে বিষয়গত কারিগরি দক্ষতার ধাপ। এখানে শ্রমিক, ক্লিনার, ইলেকট্রিশিয়ান, ড্রাইভার, শেফ, কন্সট্রাকশন ওয়ার্কারসহ আরও কতোগুলো অপশন আছে। যিনি যে কাজে দক্ষ সেটা নির্বাচন করে যেতে পারবেন পরের ধাপে। এখানে লিঙ্গও উল্লেখ করতে হবে। তারপর বিদেশে কাজের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রদান করলে মূল অ্যাপে প্রবেশ করা যাবে।

‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া, চাকরি খোঁজাসহ আবেদনের অগ্রগতি এবং গন্তব্যে পৌঁছানোর পর কী কী করতে হবে তা জানা যাবে। তবে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু না করে কিংবা এর মাধ্যমে বিএমইটি ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত না হলে অন্য সেবা পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া প্রবাসী কর্মীদের জন্য নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিস, রিক্রুটিং এজেন্সি, জেলা জনশক্তি অফিস, মেডিক্যাল সেন্টার, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ (টিটিসি) জিপিএস-এর মাধ্যমে দেখা যাবে। নির্দিষ্ট অফিসের ঠিকানায় কিংবা নামে ক্লিক করলে ম্যাপে সেটার অবস্থান দেখা যাবে। তাছাড়া এই অ্যাপে বৈধভাবে বিদেশ যাত্রার ধাপগুলোর একটি তালিকাও করে দেওয়া আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here