ব্র্যাকে যোগ দিলেন সেই রায়হান কবির, কাজ করবেন প্রবাসীদের জন্য

0
1606

অভিবাসীদের প্রতি মালয়েশিয়া সরকারের নিষ্ঠুর আচরণ নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করা বাংলাদেশি তরুণ রায়হান কবির বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামে ইনফরমেশন সার্ভিস সেন্টার অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। আজ দুপুরে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান রায়হানের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়োগপত্র তুলে দেন।

নিয়োগপত্র পাওয়ার পর নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রায়হান কবির বলেন, ‘প্রবাসীরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অর্জন অনেক। তারপরেও তারা প্রায়ই দুর্দশায় পড়েন। এই প্রবাসীদের জন্য কিছু করার ইচ্ছা ছিল অনেক আগে থেকেই। মালয়েশিয়াতেও সেটা করেছি। এখনো করবো।’

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামে রায়হান কবিরের যোগদান প্রসঙ্গে অভিবাসী ডটকম কে শরিফুল হাসান বলেন, ‘ আজকের দিনটা আমাদের জন্য আনন্দের। প্রবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য রায়হান যেভাবে লড়াই করেছিলেন সেটি যে কাউকে মুগ্ধ করবে। রায়হান সবসময় তার সততা ও দেশপ্রেম দিয়ে প্রবাসীদের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন। ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে তিনি সেই সুযোগ পাবেন বলে আশা করছি।’

গত বছরের ৩ জুলাই আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয়। সেখানে দেখানো হয়েছে, কর্মহীন ও খাবারের সংকটে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন করে ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ওই প্রামাণ্য প্রতিবেদনে বাংলাদেশিদের পক্ষে বক্তব্য দেন রায়হান কবির। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মালয়েশিয়ার পুলিশ তার বিরুদ্ধে সমন জারি করে। ২৪ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের ২১টি সংগঠনসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানায় অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করে। মালয়েশিয়া সরকার তাকে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু রায়হান জানান, তিনি যে দেখেছেন তাই বলেছেন। পরে মালয়েশিয়া সরকার তাকে নির্দোষ হিসেবে ২২ আগস্ট বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়।

রায়হানের বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে। বাবা-মা আর দুই ভাই-বোনের পরিবার। স্থানীয়রা বলছেন, বন্দরে নিজ এলাকাতেও সবার কাছে প্রতিবাদী তরুণ হিসেবে পরিচিত রায়হান। এলাকার সবার বিপদে-আপদে পাশে থাকতেন। নিজের বই, টাকা দিয়ে সাহায্য করতেন শিক্ষার্থীদের। এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে দারুণ সোচ্চার ছিলেন তিনি। সবার বিপদে পাশে থাকতেন। এখনো সেই কাজটিই করতে চান রায়হান। তিনি বলেছেন, সবসময় তিনি মানুষের পাশে থাকতে চান। এই দেশের জন্য লড়তে চান। লড়তে চান প্রবাসীদের জন্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here