২০ হাজারেরও বেশি মানুষ ছোটো নৌকায় করে চলতি বছর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এছাড়া গত শনিবার ১৪ টি নৌকায় করে ছয়শো সাতজন চ্যানেলটি পাড়ি দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শুধু ২০২২ সালেই মোট তিনবার একসঙ্গে ছয়শো জনের অতিক্রম করার ঘটনা ঘটলো। গত বছরের পুরোটা সময়জুড়ে ২৮ হাজার ৫২৬ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিলো।
গত এপ্রিলে দেশটির সরকার বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে ঘোষণা করেছিলো যে, অনিয়মিত উপায়ে যারা যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করবে তাদেরকে রুয়ান্ডায় পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে দুই দেশের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছিলো। যদিও অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যমুখী না হওয়ার ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ কার্যত ব্যর্থ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অর্থাৎ অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর ভয় দেখিয়ে কোনো লাভই হয়নি।
‘নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই যে, এই উদ্যোগ অভিবাসীদের (ইংলিশ চ্যানেল) পাড়ি দেয়া প্রতিরোধ করতে পারবে। এপ্রিলে ঘোষণাটি দেয়ার পরও উল্লেখযোগ্যহারে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে’-বলেন একজন কর্মকর্তা।
আরো পড়ুন: ফুটপাতে ঘুমানোর অধিকারও খর্ব করবে যুক্তরাজ্যের নতুন অভিবাসন নীতি!
এদিকে চলতি মাসে তিন হাজার ৬১৮ জন দেশটিতে প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৬৯৪ জনই গত এক সপ্তাহে প্রবেশ করেছে। এছাড়া চলতি মাসের এক তারিখ নৌকায় চড়ে একসঙ্গে ৬৯৬ জন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার সংখ্যাটি ছিলো চলতি বছর দেশটিতে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ রেকর্ড।
পাচারকারীরা ‘দাম কমিয়েছে’
এ বছর উল্লেখযোগ্য হারে অভিবাসী বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে শান্ত আবহাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। অন্যদিকে শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মানব পাচারের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার জন্য পাচারকারীরা অভিবাসনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের যুক্তরাজ্যে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে দাম কমিয়ে দিয়েছে।
এছাড়া গত সপ্তাহে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিলো, কীভাবে টিকটককে ব্যবহার করে মানবপাচারকারীরা অভিবাসনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে অনিয়মিত উপায়ে ইংলিশ চ্যানেল হয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে আকৃষ্ট করে। এমনকি প্রতিদ্বন্দী পাচারকারীদের সঙ্গে টেক্কা দিতেও তারা প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তাদের সেবাই সবচেয়ে ভালো এটা বোঝাতে গিয়ে এক এক পক্ষ নিজেদের মতো করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন বানিয়ে তা প্রচার করছে। ‘রুয়ান্ডা বাতিল করা হয়েছে’ মর্মে ভুল তথ্য সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বানিয়েও অভিবাসনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন: যুক্তরাজ্যে অভিভাবকহীন শরণার্থী শিশুরা যেমন আছে…
সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘জাতীয়তা ও সীমান্ত বিষয়ক আইনের অধীনে কেউ যদি অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করে তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। যারা অবৈধভাবে দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান করেছি আমরা।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই আইন চালুর শুরুতেই ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি