‘অবৈধ অভিবাসী’ শব্দটিকে অভিষপ্ত না বলে যেন উপায় নেই। কারণ এই একটি পরিচয়ের কারণেই লটারিতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা জিতেও তা হারাতে যাচ্ছেন একজন নাগরিক। সংবাদমাধ্যম এএফপির উদ্ধৃতি দিয়ে আল জাজিরার খবরে বলা হচ্ছে, বেলজিয়ামে কাগজপত্র ছাড়া বসবাসরত একজন আলজেরিয়ান নাগরিক একটি স্ক্রাচকার্ডে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ( দুই লাখ ৫০ হাজার ইউরো ) জিতেছিলেন।
কিন্তু কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তিনি যদি তার ‘বৈধ’ পরিচয় প্রমাণ না করতে পারেন, তাহলে তাকে পুরস্কারের এ অর্থ দেয়া হবে না। অবশ্য, আলজেরিয়ান এ নাগরিকও নাছোরবান্দা। তিনি তার প্রাপ্য পুরস্কার পাওয়ার জন্য এরই মধ্যে আইনি লড়াইয়ে নেমে গেছেন।
গতকাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে ২৮ বছর এই আলজেরিয়ান যুবকের আইনজীবী আলেকজান্ডার ভার্স্ট্রটে বলেছেন, “আমার মক্কেল একটি অবৈধ পরিস্থিতিতে আছেন, তার কোনো কাগজপত্র নেই এবং কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও নেই। আমরা সেই নথিগুলি খুঁজছি, যা তার পরিচয় প্রমাণ করতে পারে। (এজন্য) তাকে আলজেরিয়ায় তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।’’
এ আইনজীবী আরো জানিয়েছেন যে, তার বন্ধুরা তার পক্ষে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে না পারায় বিজয়ী স্ক্রাচকার্ডটি বর্তমানে ব্রুগস শহরের একটি আদালতে রাখা হয়েছে। এর আগে উত্তর আফ্রিকা থেকে আসা তার বন্ধুদেরও চুরির সন্দেহে পুলিশ এক রাত আটক করে রেখেছিল। বিজয়ী লটারিটি কয়েক সপ্তাহ আহে জিবরুগ থেকে কেনা হয়েছিল।
বেলজিয়ামের বন্দর শহর অভিবাসী এবং উদ্বাস্তুদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল, যারা ট্রাক বা কন্টেইনারে লুকিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।
আলজেরিয়ান নাগরিকের ওই আইনজীবী আরো বলেছেন, ‘তার ক্লায়েন্ট, যিনি বেলজিয়ামে থাকার জন্য আশ্রয়ের আবেদন করতে চান না। এ অভিবাসী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন যে, পুরস্কার না পাওয়া পর্যন্ত তাকে নির্বাসিত করা হবে না।’
লটারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এর মুখপাত্র জোক ভার্মোর জানিয়েছেন, এক লাখ ইউরোর বেশি যেকোনো পুরস্কারের জন্য বিজয়ীকে অবশ্যই ব্রাসেলসে কোম্পানির সদর দফতরে যেতে হবে। অবশ্য এখানেও বিজয়ীর ওই তিন বন্ধু গিয়েছিল।
ভার্মোর পুরস্কারের অর্থ না দেয়ার কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘বিজয়ী আমাদের জায়গা দেখাননি, আমরা তাকে দেখিনি, যা আপাতত পুরস্কার প্রদানের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে।’ তবে তিনি এও নির্দিষ্ট করে বলেননি যে, লটারি জেতা এ টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে ঠিক কোন কোন কাগজপত্র লাগবে। এ নিয়ে তার মন্তব্য ‘এ বিষয়টি ব্রুগসের পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিসের হাতে।’
সূত্র: আল জাজিরা