করোনা মহামারির প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির গতি প্রকৃতিটাই বদলে গেছে। এর রেশ অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পড়েছে। বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরত অভিবাসীদের আর্থিক পরিস্থিতি বেশ সংকটের মধ্যে পড়ছে। এর মধ্যে বিদেশ থেকে বাধ্য হয়ে তাদের ফেরার ব্যাপারটি সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, করোনাকালীন সময়ে এ দেশে প্রায় ১ লাখ ৮১ হাজার ৪৩০ জন কর্মী ফেরত এসেছেন। এর মধ্যে মহামারী প্রকোপের জন্য কাজ বন্ধ থাকায় ৯০ হাজার ৫০৮ জন কর্মী ফেরত এসেছে। কারো কারো ইকামার (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায়, কেউবা কাজ হারিয়ে বাধ্য হয়ে দেশে ফেরত এসেছে। ইতোমধ্যে কারো কারো ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। এসব প্রবাসীরা পুনরায় বিদেশে যেতে পারবে কিনা সংশয় রয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, শ্রমশক্তির জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশে প্রতিবছর প্রায় ৭ লাখ মানুষ গমন করে। এ বছর জানুয়ারী থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত যেতে পেরেছেন মাত্র ১ লাখ ৮০ হাজার জন। ফলে, তুলনামুলকভাবে কম সংখ্যক শ্রমিক বিদেশে গমণ তার উপর প্রবাসীদের দেশে প্রত্যাবর্তন। সবকিছু মিলিয়ে ফেরত আসা শ্রমিকদের খারাপ সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে।
অবশ্য সরকার এরই মধ্যে বিদেশ ফেরত অভিবাসী শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার ৭০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করেছে। এর মধ্যেই ২০০ কোটি টাকা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে বরাদ্দ দেয়া হয়। এ তহবিলে আরো ৫০০ কোটি টাকা যুক্ত হবে। প্রত্যাগত এসকল শ্রমিকরা বা তাদের পরিবারের সদস্যরা এক লাখ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ৪ শতাংশ হারে সরল সুদে ঋণ নিতে পারবে। এখন দেখার পালা সরকার গৃহিত এই সব পদক্ষেপ ফেরত আসা শ্রমিকদের জীবন বদলের ক্ষেত্রে কতোটা ভ‚মিকা রাখতে পারে।