অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিপাতের ধরণ, তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী তাপমাত্রা এবং ব্যাপকমাত্রায় খরা চাষাবাদ প্রক্রিয়াকে আরও কঠিন করে তুলছে
জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দারুনভাবে প্রভাব ফেলছে। দিনকে দিন এটি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, এই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষ ভবিষ্যতে আরো বেশি সংখ্যায় জলবায়ু অভিবাসী হয়ে উঠবে, এমনটাই আশংঙ্কা প্রকাশ করেছেন তুরস্কের সমাজবিজ্ঞানী এবং আন্টালিয়ার আকদেনিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী গবেষক সুজান ইলক বিলবেন। গবেষকদের আশঙ্কা, জলবায়ু পরিবর্তন এই মাত্রায় চলতে থাকলে ২০৭০ সাল নাগাদ প্রতি তিন জনের একজন বাস্তুচ্যূত হবে।
সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি (এএ) এর সঙ্গে কথা বলার সময় তুরস্কের আঙ্কারার মাইগ্রেশন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সুজান ইলক বিলবেন বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের পাশাপাশি যেসব সম্প্রদায়দের জীবন বিপর্যস্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ, তাদের জীবনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের উপর জোর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর মহাদেশীয় পৃষ্ঠের এক শতাংশেরও কম অংশ হলো অত্যন্ত উষ্ণতম অঞ্চল। ২০৭০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলগুলোতে গড়ে পাঁচজনে একজন মানুষ বৃদ্ধি পাবে। এবং ধারণা করা হচ্ছে সেসময় গড়ে তিনজনের মধ্যে একজনকে বাস্তুচ্যুত বা স্থানচ্যূত হতে হবে’। যেকারণে বর্তমানে সমাজবিজ্ঞানীরা অভিবাসী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের উপর নজর দিচ্ছে।
আরো পড়ুন
পাখির অভিবাসনে জলবায়ু পরিবর্তন গুরুতর প্রভাব ফেলছে
জলবায়ু পরিবর্তন নারীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে
ক্রমবর্ধমান এবং অপ্রত্যাশিত বৃষ্টিপাতের ধরণ, তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী তাপমাত্রা এবং ব্যাপকমাত্রায় খরা চাষাবাদ প্রক্রিয়াকে আরও কঠিন করে তুলছে, বলে জানান তিনি।
জনগোষ্ঠীর উপর খাদ্য ও পানির ঘাটতি এবং তাপমাত্রার ক্রমবর্ধমান প্রভাব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গণ-অভিবাসন আরও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে বলেও আশংঙ্কা রয়েছে তার। জলবায়ু স্থানান্তরের সম্ভাব্য রুট সম্পর্কে বিলবেন বলেন, দক্ষিণ এশিয়া এবং সাব-সাহারান আফ্রিকায় বসবাসকারী প্রায় ১৪৩ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। কেননা জলবায়ুর চরম পরিবর্তন বারবার আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণ এবং তীব্রতাকে বাড়িয়ে দেয়।
ফলে খরা এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ছাড়াও, কেবলমাত্র সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বিশ্ব ব্যাপী ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।
বিলবেনের মতে, তুরস্ক ভূমধ্যসাগরীয় অববাহিকায় অবস্থিত হওয়ায়, শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা তৃতীয় সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হতে পারে।
সূত্র: ডেইলি সাবাহ