গত তিন বছরে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টাকালে ১৪ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশীকে আটকের পর তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে ভারত সরকার। দেশটির সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) আজ এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে। একইসঙ্গে বাহিনীটি বলছে, ফেরত পাঠানো অধিকাংশ বাংলাদেশীই জীবিকার সন্ধানে বেআইনিভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে গিয়েছিল।
এমন সময় বিএসএফ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করলো, যখন কিনা মাত্রই বাংলাদেশ সফর করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর
এমন এক সময় বিএসএফ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করলো, যখন কিনা মাত্রই বাংলাদেশ সফর করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। সংক্ষিপ্ত সফর শেষে আজ সকালে এস. জয়শঙ্কর ভুটানের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন।
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে ‘অবৈধভাবে’ থাকার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৯ হাজার ২৩৩ জন বাংলাদেশীকে আটক করা হয়। একই সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ১ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ২৮ এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় প্রায় ৪ হাজার ৮৯৬ বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিএসএফ। সবমিলিয়ে মাত্র তিন বছরে ১৪ হাজার ৩৬১ জন বাংলাদেশী নাগরিককে সীমান্ত অতিক্রমের সময় আটক করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে যে, ভারতে প্রবেশ করা এসব ‘অবৈধ’ অভিবাসীদের একটা বড় অংশই দক্ষিণবঙ্গের অধিবাসী। ১৪ হাজার ৩৬১টি অনুপ্রবেশের চেষ্টার মধ্যে ১১ হাজার ৩৪টি দক্ষিণবঙ্গের সীমান্তে প্রতিরোধ করা হয়েছে।
সীমান্ত পাড়ি দেয়া বাংলাদেশীরা দক্ষিণাঞ্চলকে লক্ষ্যবস্তু করার কারণ হলো, এখানে অরক্ষিত ও নদীকেন্দ্রিক সীমান্ত রয়েছে। এর ফলে সীমান্ত পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে অনুপ্রবেশ করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ ফাঁকি দেয়া তুলনামূলক সহজ। মূলত এই সীমান্ত এলাকাটি সুন্দরবন থেকে মালদা পর্যন্ত বিস্তৃত।
অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা দাবি করেছেন যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করার সময় তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশল পরিবর্তন করেছে।
সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে কথা বলার সময় এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য, আটককৃতরা কোনো রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা তা যাচাই করার পর, আমরা নিরাপত্তা বাহিনীকে শুভেচ্ছা বার্তা হিসাবে তাদের (আটককৃতদের ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করতে বলেছি। কারণ তাদের কারাগারে রাখার কোনো উদ্দেশ্য (আমাদের) ছিল না।’
এসময় তিনি আরো জানান, যারা ‘অবৈধভাবে’ সীমান্ত অতিক্রম করেছে, তাদের অধিকাংশই জীবিকার সন্ধানে এসেছিল।
সূত্র: টাইমস নিউ নাউ