সম্ভাবনাময় এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের কাজের ভিসা দেওয়া শুরু করবে বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। গত সোমবার ঘোষিত এই স্কিমের আওতায় বিদেশের শীর্ষ ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা যুক্তরাজ্যে দুই বছরের কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
পাশাপাশি যারা ডক্টরেট রয়েছে, তারা তিন বছরের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তারা দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান ভিসায় যেতে পারবে এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আসার অনুমতিও দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
তবে নতুন ঘোষিত এ সুবিধা পেতে হলে কয়েকটি শর্ত বাধ্যতামূলকভাবে পূরণ করতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: নতুন স্কিমের অধীনে যারা আবেদন করবে, তাদের অবশ্যই আবেদনের তারিখ থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অবশ্যই নিম্নলিখিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে অন্তত দুটি র্যাকিংয়ে শীর্ষ ৫০ র্যাঙ্কিং-এর মধ্যে থাকতে হবে। এর মধ্যে প্রধান তিনটি হলো যথাক্রমে দ্য টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং ও দ্য একাডেমিক র্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি (দ্য সাংহাই র্যাংকিং) ও কোয়াকোরেলি সাইমন্ডস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং।
আরো পড়ুন:
ইউরোপের যেসব দেশে ফ্রিল্যান্স ভিসা দেওয়া হয়
২০২১ সালে যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সাম্প্রতিক তালিকা যুক্তরাজ্য সরকার অনলাইনে প্রকাশ করেছে। এতে দুই ডজনেরও বেশি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি কানাডা, জাপান, জার্মানি, চীন, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স এবং সুইডেনের প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
সরকার বলেছে, প্রার্থীদের অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে, তারা অপরাধমূলক কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নয় ও তারা নিরাপদ। এছাড়া একটি মধ্যবর্তী স্তরে ইংরেজি বলতে, পড়তে, শুনতে এবং লিখতে সক্ষম হতে হবে।
‘অবিশ্বাস্য সুযোগ’
অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, এই প্রকল্পটি যুক্তরাজ্যকে উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা এবং উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই আগামীকালের ব্যবসাগুলো আজ এখানে গড়ে উঠুক। এই কারণেই আমি শিক্ষার্থীদের এখানে তাদের ক্যারিয়ার গঠনের অবিশ্বাস্য সুযোগটি সদ্ব্যবহারের আহ্বান জানাই।’
নতুন নিয়মে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল এ নিয়ে। অনেকেই নীতিটিকে ‘অভিজাত’, ‘বর্ণবাদী’ এবং ‘অলস’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
‘এটা খুবই ভালো ভিসা, একেবারে লাখের বাড়ি মারবে’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পর থেকে যুক্তরাজ্য ইইউ নাগরিকদের দেওয়া অগ্রাধিকারের অবসান ঘটিয়েছে। এবং একটি কেন্দ্রভিত্তিক অভিবাসন ব্যবস্থা চালু করেছে; যা আবেদনকারীদের তাদের যোগ্যতা এবং ভাষার দক্ষতা থেকে শুরু করে তাদের দেওয়া চাকরির ধরন সবকিছুর উপর র্যাংকিং করে।
কিন্তু দেশটি বেশ কয়েক বছর ধরে কঠোর শ্রমবাজারের মুখোমুখি হয়েছে। ব্রেক্সিট এবং কোভিড -১৯ এর ফলে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে উৎপাদন, সরবরাহ এবং খাদ্য খাতের সংস্থাগুলি সরকারকে এন্ট্রি-লেভেল চাকরির নিয়মগুলি শিথিল করার আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা