অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবসায় ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপক শ্রমিক ঘাটতি চলছে। একইসঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে কাজ করানোয় নানাবিধ সমস্যা মুখোমুখি হচ্ছে দেশটি। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের স্থায়ী অভিবাসী গ্রহণের পরিমাণ বাড়ানো এবং অস্থায়ী অভিবাসীদের আয়ের সীমা তুলে নেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স বলছে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মীদের ঘাটতি পূরণ এবং অস্থায়ী কর্মীদের ওপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে চলতি অর্থ বছরে এক লাখ ৯৫ হাজার স্থায়ী অভিবাসী গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩৫ হাজার বেশি।
এছাড়া আজ অস্ট্রেলিয়ার দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক মন্ত্রী ব্রেন্ডন ও’কনর জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া সরকার অস্থায় অভিবাসীদের জন্য আয়ের সীমা তুলে নেয়ার পক্ষে। তার যুক্তি, শ্রমিকদের ব্যাপক ঘাটতি মোকাবিলায় বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
মূলত কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তার নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া সরকার দেশটির সীমান্ত দুই বছর ধরে বন্ধ করে রেখেছিলো। এছাড়া এই সময়ে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী ও মৌসুমী শ্রমিকরা দেশ ত্যাগ করলে প্রচণ্ড কর্মী সংকটে ভুগতে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি।
আরো পড়ুন: জলবায়ু ইস্যু ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা করতে আগ্রহী অস্ট্রেলিয়া
ক্যানবেরায় সরকারি চাকরির শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার কাজের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য নতুন করে মানুষদের নিয়ে আসা, তাদের কয়েক বছর ধরে রাখার কোনো মানে হয় না।’ ‘আমার মানুষ চাই…নিশ্চিত থাকতে এবং তাদেরকে অস্ট্রেলিয়ান পরিবারের সঙ্গে যোগ দিতে। অভিবাসন আমাদের গল্পের অংশ।’
পরিকল্পনা অংশ হিসেবে ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়া চলতি অর্থ বছরের জন্য এই কর্মী বৃদ্ধি কার্যকর হবে এবং অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন লক্ষ্যমাত্রা ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এক লাখ ৯০ হাজারের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে।
সম্প্রতি দেশটির নির্বাচিত কেন্দ্রীয় বাম শাসিত শ্রম সরকার প্রধান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার সম্ভাব্য সমাধানের উপায় খুঁজতে সহযোগিতা করার জন্য ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ও ইউনিয়নগুলিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দুই দিনের সম্মেলন ডেকেছে।
অস্ট্রেলিয়ার বেকারত্বের হার এখন ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ৩.৪% অবস্থায় রয়েছে। বিপরীতে শ্রমের ঘাটতি ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতিতে প্রভাব রেখেছে, যা প্রকৃত মজুরি হ্রাসে ভূমিকা রেখেছে।
আরো পড়ুন: সিডনি, মেলবোর্ন থেকেও মানুষ অন্য শহরে চলে যাচ্ছে!
এদিকে কানাডা ও জার্মানির মতো দক্ষ শ্রম বাজার প্রতিষ্ঠা ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ‘আমরা বিশ্বের সেরা প্রতিভা অন্বেষণের জন্য একটি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় রয়েছি এবং সেরাদের আকর্ষণ করতে নিয়মের মধ্যে থেকে যত বেশি বাঁধা দূর করা সম্ভব হবে তা দূর করবো’-বলেন অস্ট্রেলিয়ান ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপের শীর্ষ নির্বাহী ইনেস উইলোক্স।
সূত্র: রয়টার্স