জাতিসংঘের অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, লিবিয়ার উপকূলে নতুন করে নৌকাডুবির ঘটনায় এক শিশুসহ কমপক্ষে ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে নিখোঁজ সবাই মারা গেছে। গত রোববার জুওয়ারা শহরের কাছে লিবিয়ার উপকূলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।


আইওএম এর মুখপাত্র সাফা শেহলি আজ বলেছেন, ‘৭০ জনের মতো মানুষ রাবারের নৌকায় ছিল। লিবিয়ার কোস্ট গার্ড ৫১ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের সবাই মিশরের নাগরিক।’ তিনি আরো নিশ্চিত করেছেন যে, একটি মৃতদেহও উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির কোনো পরিচয় এখনো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

থামানো যাচ্ছে না অভিবাসীদের ঝঁকিপূর্ণ চলাচল


ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে হতাহতের চলমান ঘটনাগুলোর সঙ্গে লিবিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির এ ঘটনাটি সর্বশেষ সংযোজন। চলতি বছরের জুলাইয়ে, এই অঞ্চলেই আরো দুটি পৃথক ঘটনায় কমপক্ষে ৮০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

এ বছরের ২২ এপ্রিল লিবিয়ার উপকূল সবচেয়ে বড় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে, যাতে প্রায় হারায় ১৩০ জন। এত হতাহতের স্বত্বেও এই পথ ধরে অভিবাসীদের চলাচল থামানো সম্ভব হচ্ছে না।


আইওএম এর ‘মিসিং মাইগ্রান্টস প্রোগ্রাম’ বিশ্বব্যাপী অভিবাসনের রুটগুলো পর্যবক্ষণ করে আসছে। এতে দেখা গেছে, মধ্য ভূমধ্যসাগরে এই বছর ১ হাজার ৫১ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের পুরোটা সময় জুড়ে এ সংখ্যা ছিল ৪১১ জন।

ডিটেনশন ক্যাম্পে ফেরত ৬ হাজারেরও বেশি অভিবাসী

উত্তর আফ্রিকার উপকূল ব্যবহার করে ভিন দেশে পাড়ি জামানোর মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। আইওএম এর মতে, চলতি বছরের শুরু থেকে ২২ হাজার এরও বেশি অভিবাসীকে আটক করে লিবিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। ফিরে আসা অভিবাসীদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার জন সরকারি আটক কেন্দ্রে রয়েছেন।


আই্ওএম আশঙ্কা করছে, অনেকেই চাঁদাবাজির শিকার অথবা পাচারকারীদের হাতে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা কয়েক বছর ধরে জোরপূর্বক শ্রম, মারধর, ধর্ষণ এবং নির্যাতনসহ পদ্ধতিগত নানা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এদিকে অধিকারকর্মীরা সতর্ক করে বরাবরই বলে আসছেন, লিবিয়া প্রত্যাবর্তনের জন্য মোটেও নিরাপদ দেশ নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here