টাকার কাছে দুনিয়া আসলেই বন্দি, অচল। আপনার টাকা আছে, তো আপনি যা খুশি করতে পারবেন। কথাটি আরেকবার অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ হয়ে গেল জর্ডানের একই পরিবারের ছয় সদস্যের ক্ষেত্রে। চলতি সপ্তাহে যথাক্রমে সাত ও পাঁচ, তিন ও একবছরেরও কম বয়সী চারটি শিশু ও তাদের বাবা-মাকে ‘বিদেশিদের জন্য বসবাসের আইনের’ আর্টিকেল ১৬ এর অধীনে জর্ডানে ফেরত পাঠিয়েছে কুয়েত সরকার। মূলত আর্টিকেল ১৬ এর আওতায় জীবনযাপনের জন্য রোজগারের কোনো উৎস নেই এমন বিদেশি নাগরিকদের কুয়েত থেকে বের করে দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীকে।
করোনা মহামারির ছোবলে অন্য অনেকের মতো এই পরিবারটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাবা-মা দুজনই চাকরি হারিয়ে নিদারুণ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছিলেন। এর ফলে জীবন ধারণের জন্য প্রায় অর্থশুণ্য হাতেই দিন পার করতে হয়েছে তাদের। এমনকি থাকার জায়গা না থাকায় জর্ডানিয়ান এই পরিবারটিকে সমুদ্র সৈকতে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হয়েছে, ব্যবহার করতে হয়েছে গণসৌচাগার।
আরো পড়ুন:
পরিবারের অনটনের কাছে আমার স্বপ্নকে সঁপে দিতে হয়েছে
ভাগ্যের নির্মমতায় এমনও হয়েছে, ফুটপাতে থাকার অভিযোগে নিরাপত্তারক্ষীরা মধ্যরাতে, যখন কিনা তারা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখন তাদেরকে উঠিয়ে দিয়েছে। অবশ্য নিরাপত্তা রক্ষীরা অবাক হয়েছিলো এই কথা শুনে যে, পরিবারটি টানা দুই মাসেরও বেশি এই রকম খোলা জায়গায় দিনানিপাত করেছিলো কীভাবে!
চাকরি হারানোর কারণে এই দম্পতি ফ্ল্যাটের ভাড়া দিতে পারেনি। শুরুর দিকে তারা তাদের গাড়িতে থেকেছিলেন। কিন্তু তাদের গাড়িটিও যখন থাকার অনুপুযুক্ত হয়ে পড়ে তখন সেখানে তারা আর থাকতে পারেননি। কিছু সহানুভূতিশীল মানুষ তাদের এই দুর্দশা দেখে সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তারা খাবার ও পানি দিয়ে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এই সহযোগিতাও একদিন থমকে যায়। আর ধীরে ধীরে তারা নিদারুণ অবর্ণণীয় কষ্টের মুখোমুখি হন।
সূত্র: আরব টাইমস