করোনা মহামারীর সময় বিধনিষেধের কারণে অনেক হজ বা তীর্থযাত্রীরা গত দুই বছর সেভাবে সৌদি আরব সফর করতে পারেনি। সেই অবস্থা উত্তরণের লক্ষ্যে চলতি বছর বৈদেশিক পর্যটন বাড়িয়ে তিনগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সৌদি আরব। দেশটির পর্যটন মন্ত্রী আহমেদ আল খাতিব বলেন, ক্রাউন প্রিন্স কর্তৃক স্বাক্ষরিত প্রথম প্রকল্পগুলি খুলে দিতে হবে।’ করোনার প্রভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার ঠিক কয়েক মাস আগে দেশটি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে পর্যটন ভিসা উদ্বোধন করেছিলো।
সংবাদমাধ্যম এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আহমেদ আল খতিব জানিয়েছিলেন, ২০২০ এবং ২০২১ সালে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের সংখ্যা বেড়েছিলো। কর্তৃপক্ষেও উপাত্ত অনুযায়ী, গত বছর ৬৪ মিলিয়ন ‘অভ্যন্তরীণ পরিদর্শন’ করেছে। যেটা নতুন করে সৌদি পর্যটন খাতকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে সাহায্য করেছে। এখন কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক বাজারো তুলনামূলক বেশি দখল করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আরো বেশি…আন্তর্জাতিক দর্শকদের আকর্ষণ করার জন্য ভিন্ন উপায় বের করার চেষ্টা করছি। এবং এতে অনেকটা এগিয়েও গেছি। এই বছরের লক্ষ্যমাত্রা ১২ মিলিয়ন ছিল, যা ২০২১ সালের তুলনায় চার মিলিয়ন বেশি।
আরো পড়ুন:
সৌদি আরবের রাস্তায় যে নিয়মগুলো মানতেই হবে
‘আমরা ফিরে এসেছি এবং আমরা খুব আশাবাদী। দেশগুলি তাদের সীমানা খুলতে শুরু করেছে। বিধিনিষেধ কমতে শুরু করেছে এবং লোকেরা ভ্রমণ শুরু করেছে’-বলেন খতিব। সৌদি আরব ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন দর্শক আকর্ষণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ সংস্কার এজেন্ডার অন্যতম একটি প্রকল্প এটি; যা তেল-নির্ভর অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময়তা দান করতে এবং বিশ্বের জন্য সেটা উন্মুক্ত করে দিতে ভূমিকা রাখবে।
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সিনেমা, উন্মুক্ত কনসার্ট এবং স্পোর্টিং এক্সট্রাভ্যাঞ্জাসহ অন্য অনেক ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করেছে। তবে অ্যালকোহল নিষিদ্ধসহ অন্যান্য বিধিগুলি বহাল রয়েছে। যা সম্ভাব্যভাবে এই প্রচেষ্টাকে ত্বরাণ্বিত করতে পারে।
আরো পড়ুন:
এক বছর অপেক্ষা না করেই চাকরি বদলাতে পারবেন সৌদি প্রবাসীরা
রবিবার খতিব উল্লেখ করেছেন যে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত ১০০ মিলিয়ন দর্শনার্থীর মধ্যে ৩০ মিলিয়ন বিদেশ থেকে আসবে এবং বাকিরা সৌদি আরবের ভেতর থেকে ভ্রমণ করবে। প্রায় ৩০ মিলিয়ন স্থানীয় এবং বিদেশী ধর্মীয় স্থানসমূহ ভ্রমণ হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মক্কা এবং মদিনা, যা ইসলামের দুটি পবিত্রতম স্থান।
এবছর সৌদি কর্তৃপক্ষ এক মিলিয়ন তীর্থযাত্রীকে হজ করার অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। দুই বছর পর যেখানে করোনভাইরাস মহামারী বার্ষিক আচারের জন্য দর্শণার্থীর সংখ্যার উপর কঠোর সীমাবদ্ধতা জারি করেছিলো।
খতিব বলেন, ‘দর্শণার্থীদের নিয়ে এই ধরনের প্রকল্পের অন্যান্য বিষয়গুলি ‘২০২৫ সাল থেকে’ অনলাইনে আসবে। ফলে সেপ্টেম্বরে দিরিয়াতে একটি রেস্তোরা জেলা খোলা হবে। এটি পর্যটনের একটি নতুন স্পট হবে।’
আরো পড়ুন:
শ্রম আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের কঠোর হুশিয়ারি
‘সৌদি আরব বিশ্বব্যাপী পর্যটনের মানচিত্র পরিবর্তন করতে বদ্ধ পরিকর। ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরব যে বিষয়গুলো পর্যটকদের সামনে তুলে ধরবে, তা হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু’-পর্যটন মন্ত্রী।
সূত্র: আরব টাইমস