ঢাকার ছেলে সিদ্দিকুর রহমানের পরিচয় এখন অভিবাসী। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। প্রবাস জীবনের শুরুতে ভিনদেশি খাবার খুব একটা খেতে পারতেন না। এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে বেশ কষ্টই করতে করতে হয়েছে তাকে। কারণ বাংলাদেশি হিসেবে তার প্রধান ও পছন্দের খাবারই ছিলো মাছের তরকারি এবং সাদা ভাত। এছাড়া শাকসবজি, মাংস এবং মুরগির মতো বিভিন্ন পদও রয়েছে তার পছন্দের শীর্ষে। অন্যদিকে পুরোটাই ভিন্ন ধরনের খাবার এবং রান্নার পদ্ধতি যুক্তরাজ্যের। যার সঙ্গে মোটেও পরিচয় ছিলো না সিদ্দিকুরের।
আরো পড়ুন: খাদ্যকষ্টে শরণার্থীদের রোজা রাখাটাও কঠিন হয়ে পড়েছে!
ঘটনাক্রমে সিদ্দিকুর রহমান যুক্ত হন মাইগ্রেটফুল নামের একটি দাতব্য সংস্থার সঙ্গে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ২৫টি দেশ থেকে আগত শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী, অভিবাসন প্রার্থীদেরকে দক্ষ রাঁধুনী হিসেবে গড়ে তোলা এবং এর মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে যুক্তরাজ্যের সমাজ, সংস্কৃতির সঙ্গে তাদেরকে মানিয়ে নেয়ায় দক্ষ করে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অভিবাসীদেরকে অনন্য পরিচয়ে পরিচিত করে তুলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।
সিদ্দিকুর রহমান নিজেকে শেফ তথা রাঁধুনী হিসেবে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলেছেন। তার ভাষায়, ‘সাধারণ দিনে আমরা আমাদের দুপুর এবং রাতের খাবারের জন্য কমপক্ষে তিন বা চারটি আইটেম রান্না করি।’
সিদ্দিকুর বলছেন, তিনি ফোনে তার মায়ের কাছ থেকে বাংলাদেশের খাবার তৈরি করা শিখতে শুরু করেছিলেন। সিদ্দিকুরের ভাষায়, ‘আমার পরিবারের সবাই আমার মায়ের রান্না পছন্দ করে। তিনি যেভাবে রান্না করেন, ঠিক সেভাবেই হাত পাঁকাতে আমার বেশি সময় লাগেনি। কারণ আমি তাকে বাড়িতে রান্নাঘরে সাহায্য করতাম, তাই আমাদের রেসিপি সম্পর্কে আমার কিছু ধারণা ছিল।’
আরো পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে নিরামিষভোজী থাকবেন যেভাবে
শুরুর দিনগুলোতে খাবার তৈরী করা প্রসঙ্গে সিদ্দিকুর জানিয়েছেন, তিনি ওই সময়টায় রান্না করার সময় খুব কসরত এবং চেষ্টা করতেন বারবার রান্না করে হাত পাঁকানোর।এভাবে ধীরে ধীরে রান্নার প্রতি তার ভালবাসা বাড়তে থাকে।
পরিবার পরিজন ছেড়ে সিদ্দিকুর ভিনদেশে বসবাস করলেও সুন্দর হাতের রান্নার সুবাদে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। সিদ্দিকুর রহমান তাই নিজের রান্না প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা আমার কাছে আবেগের। সবাইকে আমাদের ঐতিহ্যবাহী রেসিপিগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’
সূত্র: মাইগ্রেটফুল