জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পোল্যান্ড এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে গেছে।
পোল্যান্ডের সীমান্ত পারাপারে ইউক্রেনীয়দের ৪০ ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে, কারণ সীমান্তজুড়ে প্রায় ১৪ কিমি (৯ মাইল) পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়েছে ।
ইউএনএইচসিআর-এর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে গত ১৫ ঘন্টায় প্রায় ৪৫ হাজার শরণার্থী পোল্যান্ডে প্রবেশ করেছে। পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া এবং মলদোভা কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনীয়দের গ্রহণ করতে এবং আশ্রয়, খাদ্য এবং আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য একত্রিত হওয়ায় কয়েকটি সীমান্ত পারাপারে গাড়িগুলিকে কয়েক কিলোমিটার ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
আগতদের অধিকাংশই ছিল নারী ও শিশু। ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী সকল ইউক্রেনীয় পুরুষকে লড়াই করার জন্য দেশ ছেড়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
পোল্যান্ডে ইতোমধ্যেই রাশিয়ার আক্রমণের আগে আনুমানিক ১৫ লাখ ইউক্রেনীয়ের আবাসস্থল ছিল এবং দেশটি ইউক্রেনের প্রতি অটল সমর্থন প্রকাশ করে আসছে। এখনও পর্যন্ত ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা বেশিরভাগকেই পোল্যান্ডের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে দেখা যাচ্ছে।
ইউক্রেনীয়দের জন্য ভিসার প্রয়োজন হচ্ছে কী
শুক্রবার, আয়ারল্যান্ড ঘোষণা করেছে যে দেশটি অবিলম্বে ইউক্রেনীয়দের জন্য ভিসার প্রয়োজনীয়তা তুলে নিচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে, ইউক্রেনের বাইরে অন্য দেশে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৫০ লাখ হতে পারে।
বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের আগমনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং মানবিক সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও জরুরি সহায়তা প্রদান করছে তবে দেশটি ইঙ্গিত দিয়েছে যে, ইউরোপই ইউক্রেনীয়দের প্রাথমিক গন্তব্য হওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনীয়রা ভিসা ছাড়াই বা আগমনের ভিসা নিয়ে প্রায় ১৪০টি দেশ এবং অঞ্চলে ভ্রমণ করতে পারে।
ইউক্রেনের জনসংখ্যার চিত্র
ইউক্রেনের আনুমানিক জনসংখ্যা ৪ কোটি ৪৪ লাখ, যা ইউরোপের সপ্তম বৃহত্তম। দেশটি ২৪টি অঞ্চল নিয়ে গঠিত, যা ওব্লাস্ট নামে পরিচিত।
১৯৯০ সাল থেকে দেশটির জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে এবং বিশ্বের সর্বনিম্ন প্রজনন হারের দেশের তালিকায় রয়েছে ইউক্রেন। ২০২০ সালের হিসাবে, ইউক্রেনের উর্বরতার হার ছিল মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ, যেখানে জনসংখ্যা স্থিতিশীল থাকার জন্য সামগ্রিক মোট উর্বরতার হার ২ দশমিক ১ শতাংশ থাকা প্রয়োজন ।
রাশিয়ার পরে ইউক্রেন ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। ৬ লক্ষ তিন হাজার ৫৫০ বর্গ কিমি আয়তনের ইউক্রেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের চেয়ে কিছুটা ছোট, ভারতের চেয়ে প্রায় তিনগুণ ছোট, দক্ষিণ আফ্রিকার অর্ধেক এবং যুক্তরাজ্যের আকারের প্রায় আড়াই গুণ।