২০২১ সালে দক্ষিণ সীমান্ত থেকেই ১৯ লাখ অভিবাসন প্রত্যাশীকে গ্রেফতার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। মিসৌরি ও টেক্সাসে জিওপি অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়ের করা বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলার প্রকাশিত নথি থেকে গ্রেফতারের উল্লিখিত নতুন এ তথ্য বেরিয়ে আসে।
এসব তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ বা চার লাখ দুই হাজার জনকে পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণ বা আশ্রয় শুনানির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।
সংবাদ মাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, মহামারি শুরু হওয়ার আগে থেকে এই সংখ্যা ছিল সামান্য পরিমাণে। এসময় গ্রেফতারকৃত অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রায় ৫৬ শতাংশকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল।
তথ্য বিশ্লেষণে আরও বেরিয়ে এসেছে, গ্রেপ্তারকৃত ১৯ লাখের মধ্য থেকে বেশিরভাগকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল এবং ‘টাইটেল ৪২’ এর অধীনে মেক্সিকো বা তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। বলা হচ্ছে, বাইডেন প্রশাসন মূলত করোনভাইরাস মহামারির পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের নির্বাসনে পাঠানোর উপযুক্ত যুক্তি হিসেবে এই নীতিকে ব্যবহার করেছে।
অবশ্য মার্কিন কাস্টমস এবং বর্ডার প্রোটেকশন কর্তৃক প্রকাশিত মাসিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে গণনা করে দেখা গেছে যে, কর্মকর্তারা ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাইডেন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর দক্ষিণ সীমান্তে অভিবাসন প্রত্যশাীদের আধিক্য ব্যাপক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল। এসময় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘অবৈধ অভিবাসন’ নীতির চেয়ে অনেক বেশি নমনীয় ছিল।
টানা তিন মাস নিম্নমুখী প্রবণতার আগে জুলাই মাসে দুই লাখ এর উপরে পৌঁছেছিল এ সংখ্যা। এরপর নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে গ্রেফতারের সংখ্যা আবার বেড়েছে, যা ২০২২ সালের প্রথম মাসগুলির জন্য একটি সম্ভাব্য প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
গত মাসে সিবিপি প্রকাশ করেছে যে, ডিসেম্বরে দক্ষিণ সীমান্তে এক লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০টি ‘অবৈধ’ অভিবাসীদের এনকাউন্টার রেকর্ড করা হয়েছে। যা আগের মাসের তুলনায় দুই শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যদিও চলতি সপ্তাহের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিবাসন প্রত্যাশীকে সারা বছর ধরে বহিষ্কার করা হয়েছে। সিবিপি উল্লেখ করেছে যে, ডিসেম্বরে মোট এনকাউন্টারের সংখ্যা অর্ধেকেরও কম ছিল। বাইডেন প্রশাসন চলমান সীমান্ত সংকটে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য বারবার সমালোচিত হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি গত মাসে বলেছেন, ‘টাইটেল ৪২‘ এর অধীনে বহিষ্কার করা যাবে না এমন অভিবাসীদের অভিবাসন প্রক্রিয়ায় রাখা হয় এবং সেই উপায়গুলির মধ্যে একটি হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে গ্রেফতারের বিকল্প কর্মসূচিতে তাদেরকে স্থানান্তরিত করা।’
সূত্র: নিউ ইয়র্ক পোস্ট