মঙ্গলবার, 11 ফেব্রুয়ারি, 2025

‘বয়স্ক’ অভিবাসীদের নির্মম বাস্তবতার গল্প আমরা কতটুকু জানি

`২০৫০ সাল নাগাদ প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের বয়স ৬০ এর বেশি হবে। এবং ‘বয়স্ক জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ নিম্ন আয়ের দেশে বাস করবে ’

‘আমি অনেক জায়গায় কাজ খুঁজেছি এবং এর জন্য সব জায়গায় আমার সিভি পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা আমার বয়স দেখে আমাকে কাজ দিতে চায় না। কিন্তু আমি এখনো খুব সক্রিয় নারী; আমার কোন সমস্যা বা অসুখ নেই। আমি একদম ঠিক আছি এবং আমার আলঝেইমার বা এরকম কিছু নেই। আমি আমার মতো করে সিভি পাঠাই- কিন্তু আমার মনে হয়, তারা আমার বয়স দেখে, আমাকে বাদ দেয়।’ ৬৮ বছর বয়সী একজন নারী; এভলিন বিলাপ করে করে এই কথাগুলো বলছিলেন। তিনি ভেনিজুয়েলা থেকে পাঁচ বছর আগে ইকুয়েডরে এসেছিলেন তার দুই মেয়ের সঙ্গে থাকার জন্য।

এভলিনের এই গল্প ল্যাটিন আমেরিকা এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর অনেক বয়স্ক অভিবাসীদের পরিস্থিতির একটি অন্তর্দৃষ্টি খুলে দেয় কিংবা নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরে। যাদেরকে সামাজিকভাবে একপ্রকার বর্জন করা হচ্ছে এবং স্বাগতিক রাষ্ট্র দ্বারা অবহেলিত তারা। আজকের সমাজে বার্ধক্যকে একটি সমস্যার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর এই ধারণার মাধ্যমে সমাজে বপন করা হচ্ছে যে, বার্ধক্য একটি বোঝা।

ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান (ইসিএলএসি) এর অর্থনৈতিক কমিশনের তথ্য অনুসারে, ল্যাটিন আমেরিকায় এই ‘বয়স্ক ব্যক্তি’র সংখ্যা আগামী ৫০ বছরে তিন গুণ বেড়ে যাবে। অর্থাৎ ২০২০ সালে যা ছিলো ৫৭ মিলিয়ন, ২০৭০ সালে সেই সংখ্যা প্রায় ২০০ মিলিয়নে পৌঁছে যাবে। বয়স্ক অভিবাসী জনসংখ্যাকে দৃশ্যমান করতে মিডিয়ার সঠিক তথ্য তুলে ধরা উচিত।

কলাম্বিয়াভিত্তিক এনজিও হেল্পএজ ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক প্রতিনিধি মার্সেলা বুস্তামান্তে বলেন, ‘বয়স্ক ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য নথিভুক্ত এবং প্রচারের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং যাতে তারা সম্পূর্ণ অদৃশ্য অবস্থার মধ্যে না পড়ে, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত মিডিয়ার। কারণ ইতিমধ্যেই অনেকেই এই তালিকায় নিজেদের নাম দেখেছেন। এটি প্রথম বার্তা যা রিলে করা দরকার। এখন অবধি কাভারেজটিতে কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যা এবং নারী ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের মতো দুর্বল গোষ্ঠীর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে।

অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস (ওএএস) দ্বারা গৃহীত বয়স্ক ব্যক্তিদের মানবাধিকারের সুরক্ষা সম্পর্কিত আন্তঃ-আমেরিকান কনভেনশন অনুযায়ী, ৬০ বা তার বেশি বয়সের কোনো ব্যক্তিকে ‘বয়স্ক ব্যক্তি’ শ্রেণীবদ্ধ করা যায়।

সর্বশেষ প্রতিবেদনগুলির মধ্যে একটি ‘এজিং অন দ্য মুভ’ হেল্পএজ ইন্টারন্যাশনাল এবং ল্যাটিন আমেরিকার ইউএন রিফিউজি এজেন্সি (ইউএনএইচসিআর) দ্বারা বয়স্ক ব্যক্তিদের চলাফেরার পরিস্থিতি এবং তাদের অধিকার প্রয়োগের উপর প্রভাব মূল্যায়ন করেছে। যেগুলো করোনায় আরো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

বুস্তামান্তে যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, গবেষণাটি নিয়মিতকরণ বা ডকুমেন্টেশন, তথ্য এবং কাজের অ্যাক্সেসের অধিকারের ক্ষেত্রে খানিক দুর্বলতা প্রকাশ করে। এবং করোনার কারণে তাদের এই অধিকার অনেকটা ক্ষুন্ন হয়েছে। যাদের কিছু আয় ছিলো, তারা অনেকেই হয় শেষ করে ফেলেছে বা যারা কম উপার্জন করেছে। আবার এদের মধ্যে অনেকেই তাদের চাকরি বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।’

ইউনাইটেড নেশনস ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স দ্বারা সংগৃহীত তথ্য অনুসারে, আন্তর্জাতিকভাবে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী অভিবাসীদের ভাগ প্রায় ১২ শতাংশ। এবং বার্ধক্যের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এমন অঞ্চলগুলোর মধ্যে ল্যাটিন আমেরিকা একটি।

আন্দিয়ান অঞ্চলে, ইউএনএইচসিআর এবং হেল্পএজ ইন্টারন্যাশনাল তাদের প্রতিবেদনে বলেছে- এই বয়সী অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে কলাম্বিয়া এবং ভেনিজুয়েলা থেকে। এবং দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে পরবর্তী সময়ে এই প্রবাহ বিশেষভাবে বেশি হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এবং (ইউএনএইচসিআর) এর যৌথ নেতৃত্বে ভেনেজুয়েলার উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য আন্তঃ-এজেন্সি কো-অর্ডিনেশন প্ল্যাটফর্মের পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় পাঁচ মিলিয়ন ভেনিজুয়েলার বাস্তুচ্যূত মানুষ অন্যান্য ল্যাটিন আমেরিকান এবং ক্যারিবিয়ান দেশে অভিবাসন করেছে। বয়স্ক মানুষের সংখ্যার কোনো নির্দিষ্ট রেকর্ড রাখা হয়নি। কলম্বিয়া, পেরু এবং ইকুয়েডর, যা ঐতিহাসিকভাবে প্রেরক দেশ ছিলো, সেগুলো এখন ভেনেজুয়েলানদের গ্রহণকারী দেশ হয়ে উঠেছে।

কর্মসংস্থানে বৈষম্য এবং বয়স্ক অভিবাসনের ‘নারীকরণ’

ডমিঙ্গো হাভিয়ের গনহালেজ সালাস; ইকুয়েডরে একজন উবার চালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি তার মেয়েকে সাহায্য করছেন। তাকে কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়া এবং তার পরিবারকে সহায়তা করার জন্য অন্যান্য ব্যক্তিগত ভাড়ার কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটি আনুষ্ঠানিক চাকরি পাওয়ার আশা নিয়ে ভেনেজুয়েলা ছেড়েছিলাম। কিন্তু ইতোমধ্যেই ৬৭ বছর বয়সী হওয়ায়, আমার বয়স আমার বিরুদ্ধে কাজ করছে।’

আন্তঃ-আমেরিকান কনভেনশন অন দ্য প্রটেকশন অব হিউম্যান রাইটস; বয়স্ক ব্যক্তিদের অনুচ্ছেদ ১৮ অনুসারে, বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অধিকারগুলির মধ্যে একটি হলো ‘শালীন কাজ’ ও ‘সমান সুযোগ এবং একই সঙ্গে অন্যান্য কর্মীদের আচরণ করার অধিকার’ হিসাবে শর্তাবলী, তাদের বয়স যাই হোক না কেন”। বাস্তবে যাই হোক, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক কাজই এই বয়স্ক জনগোষ্ঠীর বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় এবং প্রতিটি স্তরে বয়সই তাদের সামাজিক বর্জনের প্রধান কারণগুলির অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

‘মহামারি শুরুর পর অনানুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানে সরকার সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে যে ভর্তুকি প্রদান করে, তা থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছিল। তাদের কোনো সাহায্য না করে রেখে দেওয়া হয়েছিল।’ বুস্তামান্তে বলেছেন, তিনি জোর দিয়েছিলেন যে ৭৯ শতাংশ কাজ এই সেক্টরে। যেখানে তারা ‘অনিশ্চিত কর্মসংস্থান এবং শোষণ, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা এবং নিম্ন আয়ের’ সম্মুখীন হন।

ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) এর তথ্য অনুসারে, ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে গড় অবসরের বয়স ৬০ থেকে ৬৫ এর মধ্যে। কিন্তু বিশ্বের অন্যতম অসম অঞ্চলে উচ্চ স্তরের শ্রমের অনানুষ্ঠানিকতার সঙ্গে, অনেক বয়স্ক লোক একটি উপযুক্ত পেনশনের অভাবে কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এর ফলে তাদের দুর্দশা আরো খারাপের দিকে ধাবিত হয়। শেষ অবধি বাধ্য হয়ে তারা অভিবাসনের পথে পা বাড়ায়।

এভলিন বলেন, ‘আমি সবকিছু করেছি, আমি রুটি বিক্রি, ঘর পরিষ্কার ও মুরগি বিক্রি করেছি। আমি জানি না যে, আমি কত কিছু করেছি তা পূরণ করার জন্য’।
‘অনেক বয়স্ক নারী তাদের পরিবারে যোগ দিতে আসে। যখন তাদের পরিবারগুলি আরো দক্ষিণে চলে যায়, ইকুয়েডর এবং পেরু অতিক্রম করে এবং অবশেষে চিলিতে পৌঁছায়। তখন তারা পিছনে অনুসরণ করে। অনেকেই আবার এখানে একা আসেন।

আফ্রো-ভেনিজুয়েলার কর্মী এবং সমাজবিজ্ঞানী মারিয়া এমিলিয়া ডুরান বলেন, ‘এটি তাদের সবাইকে আরো দুর্বল করে তুলেছে। বয়স্ক জনসংখ্যার গতিশীলতার ক্ষেত্রেও একটি নারীকরণের প্রবণতা রয়েছে। আমি যে নারীদের সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি, তাদের জন্য এক নম্বর বিকল্পটি ছিল রাস্তায় বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করা। তাদের মধ্যে অনেকেই ট্র্যাফিক লাইটে বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে মিষ্টি বা অন্যকিছু বিক্রি করছিল। যেহেতু এটি সবচেয়ে সহজ বিকল্প, তাদের জীবন চালিয়ে নেওয়ার জন্য।’

ডুরান ব্যাখ্যা করেন, বয়স্ক নারীদের জন্য কর্মসংস্থান পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা তাদেরকে একটি অনিরাপদ জায়গায় আটকে রাখে। এবং সামাজিক সুরক্ষার অভাবে তাদের ভাগ্যকে তারা দোষারোপ করে। অনেক ক্ষেত্রে নিজেদেরকে শ্রম বা যৌন শোষণের সামনে তুলে ধরা ছাড়া তাদের কাছে কোন উপায় থাকে না। তারপর দেখা যায়, বয়স্ক নারীরা প্রায়শই অন্যান্য বিকল্পের অভাবে তাদের পরিবারের মধ্যে নানাবিধ অবৈতনিক কাজ করে থাকে। এই অদৃশ্য এবং অবমূল্যায়িত কাজ তাদের বৃদ্ধ বয়সে দরিদ্রতার চরম পর্যায়ে নিয়ে যায়। ৬২ বছর বয়সী মারিয়া ইসাবেলের এই দুর্দশা। যিনি গৃহস্থালির কাজ এবং তার নাতি-নাতনিদের যত্ন নেওয়ার কাজ করেন। যদিও তিনি এমন একটি চাকরি খুঁজে পাওয়ার আশা করেন- যা তাকে আর্থিক স্বাধীনতা দেবে।

তার স্বামীর মৃত্যুর পর অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয়। এবং তার পরিবার সেসময় কাছে ছিলো না। মারিয়া ইসাবেলকে ভেনেজুয়েলায় তার বাড়ি ছেড়ে পরিবারে কাছে রওয়ানা দিতে হয়। তিনি সংবাদ মাধ্যম ইকুয়াল টাইমসকে বলেন, ‘আমি নিজে থেকেই বোগোটাতে এসেছি। আর এখানে আসা আমার জন্য সহজ ছিলো না।

‘আমি পরিবারকে সাহায্য করার জন্য এই কাজগুলি করেছি। কিন্তু সেগুলি আমার দায়িত্ব নয়। কারণ আমি ইতোমধ্যে আমার সন্তানদের সব সম্পত্তি দিয়ে দিয়েছি। তারপরও অবশ্যই আমাকে সহানুভূতি দেখাতে হবে এবং তাদের সাহায্য করতে হবে। ঠিক যেমন তারা আমাকে এখানে থাকতে সাহায্য করছে।’

‘একজন বয়স্ক ভেনিজুয়েলার নারী হিসেবে আমি আসলে যা চাই, তা হলো আর্থিকভাবে স্বাধীন হওয়া। কারণ আমার এখনো সমস্ত ইন্দ্রিয় ভালো এবং আমি সক্ষম বোধ করি। আমার গতিশীলতা আছে, ইচ্ছা আছে এবং শক্তি আছে। কিন্তু আমি সহজভাবে সুযোগ পাইনি। এমনকি এখানে একজন সঙ্গী খুঁজেও পাইনি!’

মহামারির প্রভাব এবং চ্যালেঞ্জগুলি এখনো অব্যাহত রয়েছে

ডুরান বলেন, ‘বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য করোনা মহামারির সময়টা বেশ কঠিন হয়ে যায়, যদিও এটি ইতোমধ্যেই কঠিন ছিল এবং এখন তা আরো খারাপ হয়েছে। কীভাবে মহামারিটি জনগণের নীতির ফাঁকগুলিকে উন্মোচিত করেছে কিংবা ইকুয়েডরে স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলি পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়স্ক অভিবাসী জনগোষ্ঠীর সমস্যাগুলি তুলে ধরেছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি বাস্তবতা যা এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

হেল্পএজ ইন্টারন্যাশনাল এবং ইউএনএইচসিআর দ্বারা পরিচালিত মূল্যায়ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, করোনার সময় বয়স্ক অভিবাসীদের ক্ষেত্রে ঘাটতিগুলির মধ্যে ছিল অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসার অবহেলা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নে বিশাল ফারাক।

তিনি আরো যোগ করে বলেন, ‘আমি সবচেয়ে বেশি ভেনেজুয়েলার অভিবাসী জনসংখ্যার সঙ্গে কাজ করেছি। লক্ষ্য করতে পেরেছি, এমন একটি বিষয় হলো, পূর্ব-বিদ্যমান অসুস্থতাসহ প্রাপ্তবয়স্ক নারী। তাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ছিল; তাদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন ছিলো কিন্তু সেখানে তাদের চিকিৎসা সেবা পর্যাপ্ত ছিলো না। তাদের যৌন এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের অধিকারও গুরুতরভাবে ত্বরাণি¦ত হয়েছিল।’

হেল্পএজ ইন্টারন্যাশনাল এবং ইউএনএইচসিআর-এর মতে, রাস্তার অনানুষ্ঠানিক বিক্রেতা হিসেবে কাজ করতে বা বাড়িতে আটকে থাকার অসুবিধা, তাদের সন্তানদের উপর নির্ভরশীল করে তোলে। তাদের নাতি-নাতনিদের দেখাশোনা করার ফলে ‘মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে যেমন- বিষাদ, উদ্বেগ, বিষন্নতা, ক্লান্তি ইত্যাদি অসুবিধা দেখা দেয়। এছাড়াও অভিযোজন এবং একীভূতকরণেও তারা সমস্যা অনুভব করতে থাকে।

ডুরান বলেন, ‘পুঁজিবাদ বয়স্ক লোকদেরকে পাত্তা দেয় না এবং এই নব্য উদারপন্থী সরকারগুলি আরো কম যত্ন করে। উৎপাদন করতে সক্ষম হলেই উৎপাদনশীল বিষয়ের একটি চেতনা থাকে। এই কারণেই এখন অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। যেটা একটি মর্যাদাপূর্ণ বার্ধক্য এবং একটি মর্যাদাপূর্ণ মৃত্যুর কথা বিবেচনা করে করা দরকার।’

বুস্তামান্তে সতর্ক করে বলেন, ‘আনুমানিক ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের বয়স ৬০ এর বেশি হবে। এবং ‘বয়স্ক জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ নিম্ন আয়ের দেশে বাস করবে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই দারিদ্র অভিবাসীরাই বার্ধক্য পরিণত হচ্ছে। ভঙ্গুর সুরক্ষা ব্যবস্থার অধীনে বা সামান্য রাষ্ট্রীয় উপস্থিতি এ অবস্থার জন্য দায়ী। আমরা নিজেদেরকে প্রশ্ন করি, যে জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ বার্ধক্যে যাচ্ছে। তারা সবাই যারা অভিবাসন করছে এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আছে কিনা? তাদের জন্য বার্ধক্য কেমন হবে? কাজের ক্ষেত্রে বয়সী অভিবাসীদের কীভাবে সুরক্ষা ব্যবস্থায় একীভূত হবে? এগুলি এমন প্রশ্ন, যা আমাদের সরকারদের নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করা দরকার।’ তার সংগঠনটি এমন অনেক কণ্ঠের মধ্যে একটি, যা আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের জন্য আহ্বান জানায়, যা বার্ধক্য সম্পর্কে সমস্ত মিথ এবং স্টেরিওটাইপ থেকে মুক্ত।

ইভলিন তার কথা পরিসমাপ্তি টানেন এই বলে যে, ‘বয়স্ক লোকেরা কারো বোঝা হতে চায় না। আমার গ্রুপ আছে এবং আমার গ্রুপের সবাই আমাকে একই কথা বলে। আমিও একইভাবে অনুভব করি, আমিও রোজগার করতে চাই। কারণ যখন আমার আয় থাকে তখন আমি অকেজো বোধ করি না। আমাদের কাছে জ্ঞান আছে এবং অনেক উপায়ে অবদান রাখতে পারি আমরা।’

সূত্র: ইকুয়াল টাইমস অবলম্বনে নিবন্ধটি ভাষান্তর করেছেন রীতা জান্নাত

Get in Touch

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related Articles

অভিবাসীর সঙ্গে থাকুন

10,504FansLike
2FollowersFollow
96SubscribersSubscribe

সাম্প্রতিক ঘটনা