ইউরোপে বাংলাদেশি শিশুদের স্থায়ী বসবাসের জন্য রেসিডেন্টশিয়াল পারমিট পাওয়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপীয় পরিসংখ্যান প্রদানকারী সংস্থা ইউরোস্ট্যাট এর তথ্যমতে, ২০২০ সালে ১৫ বছরের কম বয়সী এশিয়ান শিশুদের মধ্যে রেসিডেন্টশিয়াল পারমিট প্রাপ্তির তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশি শিশুরা।
ইউরোস্ট্যাট এর প্রতিবেদনে উঠে এসছে, ২০২০ সালে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় দুই লক্ষ ১১ হাজারেরও বেশি শিশু ইউরোপে তাদের প্রথম পর্যায়ের রেসিডেন্টশিয়াল পারমিট পেয়েছে। মোট অনুমোদন পাওয়া শিশুদের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক অর্থাৎ ৩২ ভাগ এশিয়ার নাগরিক। আর এশিয়ানদের মধ্যে ছয় শতাংশ বাংলাদেশি শিশু এই পারমিট পেয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালে ১৫ বছরের কম বয়সী এশিয়ান শিশুদের মধ্যে রেসিডেন্টশিয়াল পারমিট প্রাপ্তির তালিকার ১ম স্থানে রয়েছে সিরিয়ান শিশুরা যাদের সংখ্যা ১৮ শতাংশ। এরপর ভারতীয় (১৭ শতাংশ), পাকিস্তানি (১১ শতাংশ), চীনা (দশ শতাংশ) এবং বাংলাদেশি শিশুরা (ছয় শতাংশ)। ২০১৯ সালে এই ক্যাটাগরিতে এশিয়ান শিশুদের মধ্যে রেসিডেন্টশিয়াল পারমিট প্রাপ্তিতে বাংলাদেশি শিশুদের অবস্থান আরো নিচের সারিতে ছিল।
গত বছরের ন্যায়, এবারো এই ক্যাটাগরিতে অনুমোদন পাওয়া শীর্ষ পাঁচটি নাগরিকত্বের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে এশিয়ানরা। ৬৬ হাজার ৫৬২টি পারমিট পেয়েছে এই অঞ্চলের শিশুরা, যা মোট প্রদানকৃত পারমিটের ৩২ শতাংশ। তার পরের অবস্থানে আফ্রিকা- ২৭ শতাংশ (৫৭ হাজার ৬১৩টি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ২৪ শতাংশ (৫১ হাজার ২৩ টি) পারমিট প্রদান করা হয়েছে ৷ এরপর মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ২০ হাজার ৫২৩ টি এবং উত্তর আমেরিকা থেকে চার হাজার ৭৮৬ টি পারমিট প্রদান করা হয়েছে।
পরিসংখ্যানটিতে দেখা যায়, ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য জার্মানি, স্পেন এবং ইতালি সব থেকে বেশি সংখ্যক প্রথম পর্যায়ের রেসিডেন্টশিয়াল পারমিট জারি করেছে।
ইউরোস্ট্যাট এর ডেটা বলছে, প্রধানত পরিবার গঠন এবং পারিবারিক পুনর্মিলন সম্পর্কিত কারণে এই অনুমতি জারি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সুরক্ষা সহ অন্যান্য কারণে শিশুদের জন্য আরও ৯৬ হাজার পারমিট জারি করা হয়েছিল, যেখানে শিক্ষা-সম্পর্কিত কারণে জারি করা হয়েছিল প্রায় চার হাজার পারমিট।
জার্মানি, স্পেন, ইতালি এবং সুইডেন অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রথম পর্যায়ের রেসিডেন্টশিয়াল পারমিট জারি করে থাকে। তবে, সবচেয়ে কম পারমিট জারি করা দেশের তালিকায় রয়েছে সুইজারল্যান্ড (১২৬), আয়ারল্যান্ড (১৬৭), ফ্রান্স ও লিথুয়ানিয়া (১৭৯) এবং ক্রোয়েশিয়া (৩৬৩)।
এছাড়াও, ১৫ বছরের কম বয়সী এক লাখ শিশুর অনুপাতে ইইউতে অনুমোদন করা হয় ৩৮৬টি পারমিট। তবে এই অনুপাতে ১১৩৬টি পারমিট অনুমোদন করে এগিয়ে আছে সুইডেন। এরপর স্লোভেনিয়া (১১০৯), লুক্সেমবার্গ (৯৪৩) এবং পর্তুগাল (৩৮৯) টি পারমিট অনুমোদন করেছে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রতি এক লাখ শিশুর অনুপাতে।
অন্যদিকে, এই অনুপাত অনুযায়ী তালিকার একেবারে তলানিতে অবস্থান করছে আয়ারল্যান্ড, মাত্র ১৭ টি পারমিট প্রদান করা করেছে দেশটি।
এছাড়াও ইইউতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং ওশেনিয়া দ্বীপপুঞ্জ সহ ওশেনিয়ার শিশুদের জন্য ৩৩৬টি পারমিট জারি করা হয়েছিল। রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের জন্য দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৯৫৫টি পারমিট জারি করা হয়েছিল। অজানা রাজ্য থেকে আগত, মোট পারমিট গ্রহীতাদের চার শতাংশ অর্থাৎ নয় হাজার ১৬০ জন সুবিধাভোগীর জন্য পারমিট বরাদ্দ রাখা হয়।
যাইহোক, ২০২০ সালে সদস্য রাষ্ট্র এবং তৃতীয় দেশগুলির মধ্যে দ্বিপাক্ষিকভাবে প্রদানকৃত পারমিটের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে পরিবারিক কারণে জারি করা পারমিটের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল মরক্কো এবং স্পেনের মধ্যে (বিশ হাজার ৯০০ শিশু), এরপর ব্রাজিল এবং পর্তুগাল এর মধ্যে (সাত হাজার ৩০০ শিশু) এবং সিরিয়া ও জার্মানির মধ্যে (ছয় হাজার (৫০০ শিশু)।