বয়স মাত্র আট বছর। অথচ শরণার্থীদের বেদনাবিধুর গল্প তার হৃদয়কে ছুঁয়ে গেছে, করেছে মর্মস্পর্শী। শুধু তাই নয়, শরণার্থীদের সহায়তার জন্য একটি তহবিল গঠন করে এরই মধ্যে সেখানে এক হাজার ৩০০ পাউন্ড সংগ্রহ করে ফেলেছে হৃদয়বান এক ক্ষুদে সাঁতারু।
এখন প্রশ্ন কীভাবে এই শিশুটি শরণার্থীদের কষ্টের জীবন নিয়ে এতকিছু জানলো? বেটসি সল্ট নামের এই ক্ষুদে সাঁতারু ‘দ্য বয় অ্যাট দ্য ব্যাক অব দ্য ক্লাস’ নামের একটি বই পড়েছিল। ওনজালি কিউ রউফ রচিত বইটিতে একটি শিশুর চোখ দিয়ে শরণার্থী সংকটের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। যে শিশুটি তার পরিবার ও বোনকে হারিয়েছে।
মূলত এই বইটি পড়েই শিশু বেটসি অনুপ্রাণিত হয় শরণার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে কিছু একটা করার। এরপরই সে রিফিউজি সাপোর্ট ডেভোনের জন্য ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ কিলোমিটার (তিন মাইল) সাঁতরে তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা করে।
বেটসি বলছে, তার নিজ এলাকায় বসবাসরত শরণার্থীদের সহায়তার ক্ষেত্রে এই বই তাকে উৎসাহিত করেছিল। তার ভাষ্য, ‘আমি সমস্যাটি আবিষ্কার করেছি যে, তারা কোন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে এবং আমি তাদের শুধুই সাহায্য করতে চেয়েছি। ‘আমার মনে হয় তারা এই টাকা কাপড়, কম্বল জুতাসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ক্রয়ের জন্য ব্যবহার করবে, যা তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন।’
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে পাঁচ কিলোমিটার সাঁতরিয়ে শিশু বেটসি এক হাজার পাউন্ড তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। শিশুটি বলছে, বইটি পড়ার পর সে বুঝতে পেরেছে সে সত্যিই কতোটা ভাগ্যবান যে, থাকার জন্য তার একটি সুন্দর বাড়ি আছে এবং অসাধারণ পরিবার ও বন্ধু আছে। ‘আমি অবাক হয়েছি, আমি খুব খুশি হয়েছি যে, মানুষজন অর্থ সহযোগিতা করেছে।’
বেটসির মা গেমা সল্ট মেয়েকে নিয়ে গর্ব করে বলেন, ‘বেটসি খুবই চটপটে ও দয়ালু একটি আট বছরের শিশু। আমরা সত্যিই তার চ্যালেঞ্জ নেয়ার মানসিকতা নিয়ে গর্বিত।’
‘সুইম ডেবোন’-এর স্বত্ত্বাধিকারী জেন হাসহোন বলেন, বেটসি তার ও বড়দের জন্য অনুপ্রেরণার। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি দেখবেন, সে তার সাঁতারের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে শিশু ও অন্যান্য পরিবারকে সহযোগিতা করছে, তখন আমি মনে করি, এটি সত্যিকার অর্থেই মহৎ এক উদাহরণ।’
শরণার্থীদের সহযোগিতায় আরো বেশি পরিমাণ তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বেটসি এখন তার সাঁতার চলতি মাসের শেষ তারিখ পর্যন্ত চালিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছে।
সূত্র: বিবিসি