শরণার্থী অথবা অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যূতির শিকার নারীদের প্রতি পাঁচজনের একজন যৌন নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী এ পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বিরোধী ১৬ দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনের ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের এ সংস্থাটি বলেছে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে পারিবারিক সহিংসতা, বাল্যবিবাহ, পাচার, যৌন শোষণ ও নির্যাতন বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিবৃতিটিতে ইউএনএইচসিআর আরো বলেছে, ‘বন্দিকরণ, চরম দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক চাপ, বিশ্বব্যাপী উদ্বাস্তু, বাস্তূচ্যূত এবং রাষ্ট্রহীন নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নতুন দিক উন্মোচন করছে।’
তৃণমূল পর্যায় থেকেই সংকট উত্তরণের পথ খুঁজতে হবে
তবে তৃণমূল পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। সহিংসতার শিকার নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে সহিংস এসব ঘটনা প্রতিরোধ এবং এই পরিস্থিতি সামাল দিতে তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইউএনএইচসিআর আলোকপাত করেছে যে, কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন এই জাতীয় স্থানীয়, শরণার্থী-বিষয়ক প্রকল্পগুলির প্রয়োজনীয়তা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ করোনা মহামারির কারণে আরোপিত লকডাউন শরণার্থীদের জীবন ও জীবিকাকে অনিশ্চিতায় ফেলে দিয়েছে, বাড়িয়েছে পরিবারিক সহিংসতা। যার কারণে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির পক্ষে সহায়তা প্রদান করার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে ইউএনএইচসিআর অন্তত ২৭টি দেশে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ার পর সতর্কতা জারি করেছে। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে, প্রতি ঘন্টায় দেশটিতে একটি করে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ঘটনা রেকর্ড করা হয়। কলম্বিয়া ও ভেনেজুয়েলার উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের ওপর অনুরূপ ঘটনা বছরের প্রথম তিন-চতুর্থাংশের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, মূলত কোভিড-১৯ এর আর্থিক চাপ এবং মহামারি চলাকালীন পরিবারে খাদ্যের অভাব, নারীদের প্রতি তাদের সঙ্গীর কাছ থেকে সহিংস আচরণ পাওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
থাইল্যান্ড-মায়ানমার সীমান্তে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার শরণার্থী নারীরা, যাদেরকে ইতোমধ্যে সহায়তা পরিষেবা এবং নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করা হয়েছিল, তারা এখন মহামারির কারণে কাজ হারিয়েছেন। কাজ হারানো এসব পরিবার জাতিসঘের কাছে খাদ্য সহায়তা চেয়েছেন।