মালয়েশিয়ায় অবৈধ উপায়ে প্রবেশকারীদের চাবুক মারার প্রস্তাব দিয়ে তুমুল আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন দেশটির একজন জেষ্ঠ্য পুলিশ কর্মকর্তা। এবার সেই পুলিশ কর্মকর্তা বললেন, মালয়েশিয়ায় যেসব অভিবাসন প্রত্যাশী অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে তারা ‘দরিদ্র নয়’। এছাড়া যারা এ অভিবাসন প্রত্যাশীদের দরিদ্র শ্রমিক বলে অ্যাখ্যা দেয়, তাদের সেই দাবিও এ কর্মকর্তা জোর গলায় প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বুকি আমানের ইন্টারনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড পাবলিক অর্ডার বিভাগের পরিচালক হাজানি গাজ্জালির মতে, মালয়েশিয়ায় ঢোকার জন্য পাচারকারী সিন্ডিকেটের হাতে এক হাজার ৩০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (২৬ হাজার সাতশো টাকা প্রায়) করে দেয় এই অভিবাসন প্রত্যাশীরা।
তার দাবি, এই পরিমাণ অর্থ যে অভিবাসন প্রত্যাশীরা দিতে পারে, তারা গরীব হতে পারে না। সংবাদমাধ্যম এফএমটিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় ঢোকার জন্য তাদের অবশ্যই হাজার হাজার রিঙ্গিত সঙ্গে নিয়ে আসতে হয়, এর মানে তাদের কাছে অর্থ আছে।’
এদিকে হাজানির দেয়া মালয়েশিয়ায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চাবুক মারার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন দেশটির প্রাক্তণ মন্ত্রী পি ওয়েথা মুরথি। তবে শুধু ওয়েথা মুরথি নন, হাজানির ওই বিতর্কিত প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করেছিলেন বিরোধীদলের এমপি ও অভিবাসী অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলোও।
অবশ্য হাজানি নিজের সেই বক্তব্যের প্রতি অনঢ় অবস্থান নিয়ে জানিয়েছেন, আইনে এ বিষয়টি প্রমাণিত। তিনি উল্টো জনাব ওয়েথার প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, ‘অভিবাসন আইনে এমন অপরাধের বিধান আছে। তিনি (ওয়েথা) একজন আইনজীবী। তিনি কি এই বিষয়ে অবগত নন?’
মালয়েশিয়ান অভিবাসন আইনে বেআইনিভাবে প্রবেশের জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত জরিমানা বা পাঁচ বছরের জেল বা উভয় দণ্ডে এবং সর্বোচ্চ ছয় স্ট্রোক পর্যন্ত বেত্রাঘাতের বিধান রয়েছে।হাজানি বলেন, কর্তৃপক্ষ সুপারিশ করতে পারে যে, প্রসিকিউটররা আইনের ধারা ৬ (৩) এর অধীনে অপরাধীদের অভিযুক্ত করতে পারে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, দেশটিতে মানব পাচারের বিরোধী আইন, সিকিউরিটি ওফেন্স অ্যাক্ট ও মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট নামে বিদ্যমান এই তিনটি আইনের অধীনে অভিবাসীদের পাচারকারী সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
সূত্র: এফএমটি