মেক্সিকোর দক্ষিণ সীমান্তে এক ডজন অনথিভুক্ত অভিবাসী নিজেদের ঠোঁট সেলাই করে অনশন করছেন। মার্কিন সীমান্তের দিকে যাওয়ার অনুমতি পাওয়ার জন্য দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে রাজি করাতে মঙ্গলবার তারা এই অভিনব প্রতিবাদের আশ্রয় নিয়েছেন।
এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগই মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকান। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রকাশিত কিছু চিত্রে দেখা যায়, তারা সূঁচ এবং প্লাস্টিকের সুতা ব্যবহার করে একে অপরকে তাদের ঠোঁট সেলাই করতে সাহায্য করছিলেন। শুধুমাত্র তরল খাবার খাওয়ার জন্য ঠোঁটের এককোণে ছোট জায়গা রেখেছেন তারা। সেলাই থেকে রক্তের ফোঁটা মুছে ফেলার জন্য তারা অ্যালকোহল ব্যবহার করছিলেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন কর্মী ইরিনিও মুজিকা বলেন, ‘অভিবাসীরা প্রতিবাদের চিহ্ন হিসেবে তাদের ঠোঁট সেলাই করছে। আমরা আশা করি যে ন্যাশনাল মাইগ্রেশন ইনস্টিটিউট দেখতে পাবে যে, যারা রক্তপাত করছে, তারা মানুষ।’

মেক্সিকোর মাইগ্রেশন এজেন্সি (আইএনএম) একটি পাবলিক বিবৃতিতে বলেছে যে ‘এটি উদ্বেগজনক যে, ‘কর্তৃপক্ষকে চাপে ফেলার জন্য এই পদক্ষেপগুলি অভিবাসীদের সম্মতি এবং সমর্থন নিয়ে করা হয়েছে।’
গুয়াতেমালার নিকটবর্তী মেক্সিকোর সীমান্ত শহর তাপাচুলায় নাটকীয় প্রতিবাদ করার সময় কেউ কেউ তাদের সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছিল। কয়েক মাস ধরে হাজার হাজার অভিবাসী কাগজপত্রের অপেক্ষায় অবাধে দেশটি অতিক্রম করার চেষ্টায় সেখানে সমবেত হয়েছে।
আরো পড়ুন ▪অভিবাসীদের হত্যার অভিযোগে ১২ মেক্সিকান পুলিশ গ্রেফতার ▪গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তেই ১৯ লাখ অভিবাসন প্রত্যাশী গ্রেফতার
গত কয়েক ঘন্টা ধরে না খেয়ে থাকা ইয়োরগেলিস রিভেরা নামে একজন ভেনিজুয়েলান বলছিলেন, ‘আমি আমার মেয়ের জন্য এটা করছি। কিন্তু আমি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন সমাধান দেখতে পাচ্ছি না।’
রিভেরা বলছেন, ‘আমরা এখানে বন্দীদের মতো জীবন কাটাচ্ছি।’ তিনি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মেক্সিকোর অভিবাসন সংস্থার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন৷
সংস্থাটি বলেছে যে, এসব মামলাগুলিতে শিশু, কিশোরী, গর্ভবতী, অপরাধের শিকার, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং বয়স্কদের মতো দুর্বল জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে যে, তারা প্রতিদিন তাদের অফিসে শতাধিক আবেদনকারীকে গ্রহণ করছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, সহিংসতা এবং দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে মেক্সিকো সীমান্তে আসা অভিবাসীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে, মেক্সিকোতে মূলত হাইতিয়ান এবং হন্ডুরানসদের আশ্রয়ের আবেদনের সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যক ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) সম্প্রতি বলেছে যে, বিদেশিদের আগমন বৃদ্ধির মধ্যে মেক্সিকোকে নতুন সাহায্য কর্মসূচি বিবেচনা করা উচিত।
সূত্র: রয়টার্স