নৌকায় চড়ে অভিবাসনের সময় মৃত্যুর মুখে পতিত হওয়া যেন স্বাভাবিক ভাগ্যে পরিণত হয়েছে অভিবাসন প্রত্যাশীদের। এবার সেই ফাঁদে পড়লো নতুন দেশে নতুন জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখা আরো একদল অভিবাসন প্রত্যাশী। অভিবাসী সহায়তা সংস্থা কামিনান্দো ফ্রন্টেরাস জানিয়েছে, গতকাল পশ্চিম সাহারায় মরোক্কোর বিতর্কিত অঞ্চলের নিকটবর্তী উপকূলে নৌকা ডুবে অন্তত ৪৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশী ও শরণার্থীর সলিল সমাধি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল রোববার এই দুর্ঘটনার পর স্প্যানিশ-মরোক্কোর বংশোদ্ভূত মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক হেলেনা মালেনো এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, কেপ বুজডোর উপকূলে নৌকাটি ডুবে যাওয়ার সময় আরো ১২ জন ভাগ্যক্রমে বেঁছে গেছেন, তবে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আরো পড়ুন
এ বছর ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ ১৬০০ অভিবাসন প্রত্যাশী
ভূমধ্যসাগর ‘ডুবে’ গেছে, বেলারুশ-পোল্যান্ড জেগে উঠেছে
হেলেনা আরো জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়াদের মধ্যে নিহত সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকিদের করা যায়নি। যদিও মরোক্কোর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
অভিবাসন প্রত্যাশী বোঝাই নৌকাটি ঠিক কোথায় যাচ্ছিলো তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সাধারণত এই এলাকা থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীরা স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপে প্রবেশের জন্য অভিবাসন প্রত্যাশীদের অন্যতম পছন্দের একটি ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে মরোক্কোকে বিবেচনা করা হয়।
এদিকে এ ঘটনার দুইদিন আগে গত শুক্রবার মরোক্কো ও স্পেন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছিল যে, তারা অনিয়মিত অভিবাসনের বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরো পড়ুন
ইংলিশ চ্যানেলে নৌকাডুবি, ২৭ অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু
লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবি, ১৬ জনের মুত্যুর আশঙ্কা
মরোক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মরোক্কেতে ১৪ হাজার ৭০০টিরও বেশি অনিয়মিত অভিবাসনের প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করা হয়েছে। এছাড়া ভেঙে দেয়া হয়েছে মানব পাচারের ৫২ নেটওয়ার্ক। মরোক্কোর কর্তৃপক্ষ গত বছর ৬২ হাজার ১২০টিরও বেশি ক্রসিং এবং ২৫৬ চোরাচালান নেটওয়ার্ক বন্ধ করেছিল।
অন্যদিকে স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ২০২১ সালে ৪০ হাজারেরও বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী সমুদ্রপথে দেশটিতে এসেছে। কামিনান্দো ফ্রন্টেরাস এর তথ্যানুযায়ী, একই বছর স্পেনে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ৪ হাজার ৪০৪ জন অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছে অথবা নিখোঁজ হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা ও গার্ডিয়ান