গণমাধ্যম অভিবাসন সম্পর্কে জনসাধারণের মনস গঠনে, নীতিগত সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। পাশাপাশি অভিবাসন কী এবং অভিবাসীদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে ও বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এই গুরুত্বকে অনুধাবনের পাশাপাশি ভুল তথ্য এবং অভিবাসী বিরোধী জেনোফোবিয়ার উদ্বেগজনক বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায়- মিডিয়া প্রশিক্ষণে কয়েক দশকের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ২০২০ সালের ডিসেম্বরে গ্লোবাল মাইগ্রেশন মিডিয়া একাডেমি (জিএমএমএ) চালু করেছে।
স্কুল সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম-শিক্ষার্থীরা গত ২০ জুন আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক গালওয়ের সহযোগিতায় এই গ্রীষ্মকালীন কোর্সটিতে অংশ নেয়।
আইওএম মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিটোরিনো বলেন, ‘একাডেমি সাংবাদিকদেরকে একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ এবং জ্ঞাত পদ্ধতিতে অভিবাসন বিষয়ে প্রতিবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং জ্ঞান দিয়ে সহায়তা করা প্রয়োজন। যাতে করে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অভিবাসনকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়।’
‘আমি এটা দেখে আনন্দিত যে সারা বিশ্ব থেকে ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী, সাংবাদিক এবং শিক্ষাবিদ, যারা সফলভাবে ভার্চুয়াল স্টাডিজের প্রথম কোর্সটি সম্পন্ন করেছে- তারাও এই সপ্তাহে গ্রীষ্মকালীন স্কুলে যোগদান করেছে এবং তাদের প্রশিক্ষকদের সহযোগিতায় তারা যে গল্পগুলি তৈরি করেছে, তা দেখার জন্য আমি অধীর আগ্রহী।’
মেক্সিকো, মরক্কো, নাইজেরিয়া, সার্বিয়া, আয়ারল্যান্ড এবং ফিলিপাইনের ৫৩ জন অংশগ্রহণকারী গ্রীষ্মকালীন স্কুলে যোগদান করছে। যেখানে তারা তাদের গবেষণা এবং রিপোর্টিং দক্ষতা উন্নত করতে পারবে। এছাড়াও সেমিনার ও ব্যবহারিক সেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন অভিবাসন গতিবিদ্যা সম্পর্কে ভালোভাবে শিখবে পারবে।
ফ্ল্যাগশিপ অনলাইন (জিএমএমএ) ফাউন্ডেশন কোর্সটি গ্রীষ্মকালীন স্কুলের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার জন্য আরো কার্যকরী শিক্ষামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন অংশগ্রহণকারীরা।
ফিলিপিনো সাংবাদিক নোয়েল মুরাদ বলেন, ‘ফাউন্ডেশন কোর্সটির মাধ্যমে আমি অভিবাসীদের সমস্যাগুলোর কারণ এবং অভিবাসন কেনো হয়, সে সম্পর্কে অনেক অজানা বিষয় জানতে পেরেছি। কি কারণে মানুষ তাদের নিজ দেশ থেকে অভিবাসন করতে বাধ্য হয় সেই বিষয়গুলো এখন আমার কাছে অনেকটাই পরিস্কার। এটি আমাকে অভিবাসন-সম্পর্কিত শর্তাবলীর সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে। এবং কীভাবে অভিবাসীদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর বিষয়গুলো এড়িয়ে সঠিক গল্প সবার সামনে তুলে ধরতে হয় সেটা শিখেছি।
সপ্তাহব্যাপী গ্রীষ্মকালীন ‘গুড ফ্রাইডে’ চুক্তির জন্য স্কুলে একটি বক্তৃতা সিরিজের আয়োজন করা হয়েছে। এই আলোচনায় আইরিশ সরকারের আলোচক; একজন পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী, গুগল নিউজ ল্যাব, জাতিসংঘের সংস্থা, আইরিশ টাইমস এবং ক্যাডেনা সের মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে রাউন্ড-টেবিল অংশগ্রহণ করেছে। এখানে অংশগ্রহণকারীরা আয়ারল্যান্ড ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং সার্ভিস স্টাডিজ (আরটিই) দেখার সুযোগও পাবে।
মেক্সিকোর মিডিয়া মাইগ্রেশন একাডেমিক এবং জিএমএমএ ফাউন্ডেশন কোর্সের সহ-লেখক অধ্যাপক রোডলফো ক্যাসিলাস বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে আমরা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন অভিবাসী অভিজ্ঞতার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করছি। তাদের বিশেষত্ব এবং সাধারণতা অধ্যয়ন করার পাশাপাশি জনসাধারণের কাছে সেগুলিকে উপস্থাপন করার জন্য সেরা বিকল্পগুলির প্রতিফলন করার আশা করছি।’
সূত্র: আইওএম