গ্রিক সরকার রাজধানী এথেন্স থেকে একের পর এক শরণার্থী শিবির উচ্ছেদ করছে। এরই অংশ হিসেবে আজ এথেন্সে অবশিষ্ট থাকা একটি শরণার্থী শিবির উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দারা উচ্ছেদ অভিযানের তীব্র বিরোধিতা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায়। গ্রিক কর্তৃপক্ষ একটি ভিডিও প্রচার করে বলেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডের ব্যবহার করেছে।
স্থানীয় সময় ভোর পাঁচটায় ইলেয়োনাস শিবিরটিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে পুলিশ। শিবিরটিতে প্রায় ৬৭০ জন শরণার্থী ও অভিবাসী আশ্রয় নিয়েছিলো।
উচ্ছেদ অভিযানের খবর পেয়ে আগে থেকেই এখানকার বাসিন্দারা এর ফটকগুলোতে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে রেখেছিলো। একপর্যায়ে পুলিশকে এগুলো সরিয়ে ফেলতে দেখা যায়। এসময় দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে অভিবাসী ও অভিবাসীদের অধিকার আদায় নিয়ে কর্মরতদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এ বিষয়ক ভিডিও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
আরো পড়ুন: গ্রিসে অভিবাসীদের সুরক্ষায় কাজ করলেও ‘অপরাধ’ হিসেবে গণ্য হচ্ছে!
দেশটির অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী নোটিজ মিতারাচি আজ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, এ জায়গাটির পরিসর বাড়াতে ‘ইলিয়োনাস শিবিরটি বন্ধ করে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলো সরকার। কিন্তু ‘অপ্রত্যাশিতভাবে অভিবাসী ও তাদেও প্রতি সংহতি প্রকাশকারীদের ছোটো একটি দল এই স্থানান্তরকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’ কর্তৃপক্ষ কয়েক ডজন মানুষকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে।
এথেন্সের একেবারে প্রাণকেন্দ্রের খুব কাছে অবস্থিত এই ইলিয়োনাস শিবিরটি ছেড়ে যেতে রাজি নয় এর অনেক বাসিন্দা। এখানে মূলত স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাসের সুবিধা রয়েছে এবং চাইলেও ইচ্ছেমতো বাইরে আসা যাওয়া করতে পারে, যে সুবিধাগুলো মূলত অন্য শিবিরগুলোতে নেই।
অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম এএফপিকে জানিয়েছেন, বছরের শেষ নাগাদ তারা এই শিবিরটি একেবারে বন্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। ২০১৫ সালের অগাস্টে গ্রিসের মূল ভূখণ্ডে প্রথম এই শিবিরটিই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোয়া ওঁলাদ ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্তা মেতসোলার মতো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ শিবিরটি পরিদর্শন করেছেন।
আরো পড়ুন: গ্রিসে প্রতি বছর বাংলাদেশের চার হাজার কর্মী কাজের সুযোগ পাবে
আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যেও দেশগুলো থেকে পালিয়ে আসা মানুষদের অন্যতম পছন্দের দেশ গ্রিস। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এথেন্স অবৈধভাবে অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে। যদিও গ্রিসের রক্ষণশীল সরকার এই দাবি প্রত্যাখান করে আসছে।
সূত্র: আলআরাবিয়া নিউজ