বিদেশি কর্মীদের চাকরি স্থানান্তরের জন্য সংশোধিত পদ্ধতির দ্বিতীয় ধাপের বাস্তবায়ন শুরু করেছে সৌদি আরবের মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির সংবাদ মাধ্যম সৌদি গেজেটে ও ওকাজ এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিদেশি কর্মীদের চাকরি স্থানান্তরের জন্য সংশোধিত পদ্ধতির দ্বিতীয় ধাপের বাস্তবায়ন শুরুর অর্থ হলো, এখন থেকে বেসরকারি খাতের যেকোনো প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মীরা তাদের চাকরি স্থানান্তর করতে পারবে। এর আগে প্রথম ধাপে শুধু পৃথক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শ্রমিক স্থানান্তরের অনুমতি ছিলো।
বিদেশি কর্মীরা যাতে করে খুব সহজেই এক প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক প্রতিষ্ঠানকে কাজের জন্য বেছে নিতে পারে এজন্য মন্ত্রণালয় ‘কিওয়া’ নামের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটিতে বেশ কিছু সংস্করণ এনেছে। শ্রম বাজার কৌশলের উদ্দেশ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মন্ত্রণালয়ের নীতি ও পরিষেবাগুলির বিকাশ এবং কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও শ্রম অধিকারের মতো বিষয়গুলি পরিপূর্ণভাবে সমন্বয় করা এর অন্যতম উদ্দেশ্য বলে মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলি জানিয়েছে।
নতুন গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের সময় নির্ধারিত সরকারি ফি শ্রমিকদের স্ব স্ব পূর্ববর্তী নিয়োগকর্তাকে বহন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হালনাগাদকৃত ব্যবস্থার অধীনে যেদিন থেকে নতুন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকরা কাজ শুরু করবে সেদিন থেকে সেই প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকর্তা এ সংশ্লিষ্ট সরকারি ফি বহন করবে।
আরো পড়ুন: এক বছর অপেক্ষা না করেই চাকরি বদলাতে পারবেন সৌদি প্রবাসীরা
সৌদি সরকার জোর দিয়ে বলে আসছে, নতুন এই ব্যবস্থাটি বর্তমান নিয়োগকর্তার ওপর অবৈতনিক অর্থ জমা রাখার বিষয়টি বন্ধ করতে ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে নতুন নিয়োগকর্তার ওপর আগের সময়ের বকেয়া বোঝা চাপবে না।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, নতুন নতুন গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ কর্মীদের কর্মজীবনের উন্নতিতে এবং আকর্ষণীয় শ্রম বাজার তৈরি করতে এবং প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে চাকরি স্থানান্তর পদ্ধতিকে আরো সহজ করবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯ জুন থেকে কার্যকর হওয়া সুবিধাগুলির আওতায় বেসরকারি খাতের কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সেবা স্থানান্তরকারী শ্রমিকদের বকেয়া সরকারি ফি বহন থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মী কর্মী পরিষেবার স্থানান্তর চাইছেন, তাকে সরকারি খরচ বহন করতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ক পারমিট ফি, প্রবাসী ফি (আর্থিক ক্ষতিপূরণ) এবং রেসিডেন্সি পারমিট (ইকামা) নবায়নের বিলম্বের জন্য জরিমানা ইত্যাদি।
‘কিওয়া’ প্লাটফর্মটি শ্রমিকদের পূর্ববর্তী নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে এসব ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর শুরু করেছে। এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য নতুন উদ্যোগগুলিকে অপ্রত্যাশিত আর্থিক বাধ্যবাধকতা ছাড়াই তাদের ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম করে তোলা।
৯ জুন থেকে কার্যকরী এসব সুবিধার আওতায় বেসরকারি খাতের কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সেবা স্থানান্তরকারী শ্রমিকদের বকেয়া সরকারি ফি বহন থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো
আগের নিয়ম অনুযায়ী, যে প্রতিষ্ঠানগুলি শ্রমিকদের পরিষেবা স্থানান্তর করতে চায়, তাদের ইকামা নবায়নে বিলম্বের জন্য ওয়ার্ক পারমিটের জন্য বকেয়া ফি, প্রবাসী শুল্ক এবং জরিমানা বহন করতে হয়েছিলো।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী একটি সংশোধনী অনুমোদন করেছিলেন, যেখানে প্রবাসীদের এক বছর অপেক্ষা না করে অন্য নিয়োগকর্তার কাছে তাদের চাকরি স্থানান্তর করার অনুমতি দেবে। আগের শ্রম আইনে প্রবাসী কর্মীদের চাকরি পরিবর্তনের জন্য সৌদি আরবে আসার পরে নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হতো।
সূত্র: ওকাজ, সৌদি গেজেট