জাপানে প্রায় দুই হাজার কুর্দি বসবাস করছে। এদের মধ্যে অনেকেই শরণার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। যা চলচ্চিত্র মাই স্মল ল্যান্ড-এর পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। গল্পটি ১৭ বছর বয়সী সারিয়াকে কেন্দ্র করে নির্মিত। যেখানে সারিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরশি লিনা, যিনি খুব অল্প বয়সে তার কুর্দি শরণার্থী বাবা-মায়ের সঙ্গে জাপানে এসেছিলেন
‘মাই স্মল ল্যান্ড’ চলচ্চিত্রটি জাপানের একটি কুর্দি হাইস্কুলের একটি মেয়ের আগমনী গল্প। চলচ্চিত্রটি বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফিচারধর্মী চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে নির্মাতা কাওয়াওয়াদা এমার পাশাপাশি ইরানি-জাপানি মডেল আরশি লিনার অভিনয়জগতে অভিষেক হয়। এখানে এদের দুজনের কাজ এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
কাওয়াওয়াদা এমা
এমা চিবা প্রিফেকচারে ১৯৯১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই তার কিছু চলচ্চিত্রপ্রেমীর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেসময়ই তিনি তার নির্মিত একটি চলচ্চিত্রের জন্য টোকিও স্টুডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভালে পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি কোরেদা হিরোকাজুর প্রযোজনা সংস্থা বুন-বুকু-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি তাকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মাণে সহায়তা করেছেন।
২০১৮ সালে তিনি ২৩তম বার্ষিক বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে এআরটিই আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন। মাই স্মল ল্যান্ড চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে আত্মপ্রকাশ ঘটে। ২০২২-এ মাই স্মল ল্যান্ড; ৭০তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জেনারেশন বিভাগের জন্য নির্বাচিত হয় এবং চলচ্চিত্রটিকে তারা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল স্পেশাল মেনশন ফিল্ম নামে অ্যাখ্যা দেন।
সাইতামা প্রিফেকচারে ২০০৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। জাপানি এবং জার্মানিতে তার মায়ের শিকড় রয়েছে। আবার তার বাবা একজন জাপনি নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও ইরান, ইরাক এবং রাশিয়ায় তার শিকড় রয়েছে। তিনি প্রায় নবম শ্রেণী থেকে একজন পেশাদার মডেল হয়ে ওঠেন। ২০২০ সাল থেকে তিনি ফ্যাশন ম্যাগাজিন ভিভি- এর জন্য একচেটিয়াভাবে মডেলিং করতে থাকেন। ২০২২-এর ‘মাই স্মল ল্যান্ড’-এ প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয়শিল্পী হিসেবে অভিষেক ঘটে।
জাপানে কুর্দি অভিজ্ঞতার একটি সিনেমাটিক দর্শন
জাপানে প্রায় দুই হাজার কুর্দি বসবাস করছে। এদের মধ্যে অনেকেই শরণার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। যা চলচ্চিত্র মাই স্মল ল্যান্ড-এর পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। গল্পটি ১৭ বছর বয়সী সারিয়াকে কেন্দ্র করে নির্মিত। যেখানে সারিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরশি লিনা, যিনি খুব অল্প বয়সে তার কুর্দি শরণার্থী বাবা-মায়ের সঙ্গে জাপানে এসেছিলেন। বর্তমানে তিনি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
কিন্তু যেহেতু তার মা বেঁচে নেই, ফলে তাকে বাড়িতে তার ছোট ভাই এবং বোনের যত্ন নিতে হয়। পড়াশোনা করার পাশাপাশি তাকে আর্থিক সঙ্কটের কারণে দোকানে খণ্ডকালীন কাজ করতে হয়। তিনি জাপানের কুর্দি সম্প্রদায়ের একজন দ্বিভাষিক সদস্য। ফলে যারা জাপানি বলতে পারে না, তিনি তাদের জাপানি ভাষা শেখানোর কাজ করেন। যেকারণে তার সময়গুলো কর্মব্যস্ততার মধ্যে কেটে যায় এবং তিনি মানুষের জন্য কাজ করেন।
আরো পড়ুন:
প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ফ্লি: স্বদেশ আর ভিটেমাটি হারানো এক শরণার্থীর ত্যক্ত স্মৃতিকথা
স্কুলের অনেক বন্ধু তাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি কখনই তাদের চলচ্চিত্রের পটভূমির ব্যাখ্যা দিতে রাজি নন। তিনি সোটা ওকুদাইরা ডাইকেন এর সঙ্গে কথা বলেছেন; কুর্দি পরিচয় নিয়ে তাকে কিভাবে লড়াই করতে হয়েছে সেই প্রসঙ্গে। খণ্ডকালীন চাকরির মাধ্যমে তার সঙ্গে সারিয়ার পরিচয় হয়। ঠিক সেই মুহূর্তে শরণার্থী হওয়ার জন্য তার পরিবারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয় এবং তাদের আবাসিক কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাদের চলাচলে কঠোর সীমাবদ্ধতা রেখে তাদের সাময়িক মুক্তির অধীনে রাখা হয়।
পরিচালক কাওয়াওয়াদা এমা কোরেদা হিরোকাজুর বুন-বুকু প্রোডাকশন গ্রুপের একজন উঠতি তারকা। ২০১৫ সালের দিকে তিনি প্রথম কুর্দি জনগণের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তখন তিনি আইএসআইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কুর্দি মিলিশিয়াদের মধ্যে লড়াইরত নারী সৈন্যদের ছবি দেখে হতবাক হয়েছিলেন। তিনি জানতে পারেন, জাপানে একটি কুর্দি সম্প্রদায় রয়েছে এবং তাদের সঙ্গে সফর করার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি কুর্দি সম্প্রদায়ের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এবং এর ফলাফল হলো এই প্রথম চলচ্চিত্র। যার স্ক্রিপ্ট তিনি নিজেই রচনা করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি করতে গিয়ে কাওয়াওয়াদা এবং আরশির যে অভিজ্ঞতা হয়েছিলো, তা নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।
কাওয়াওয়াদা : আমি প্রথমে চেয়েছিলাম ছবির মূল চরিত্রগুলো যেনো সবাই কুর্দিশ হয়। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদলাই। কারণ আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম যে, তাদের উপস্থিতিতে চলচ্চিত্রটি যে, সামাজিক বার্তা দেবে সেটা তাদের শরণার্থী হওয়ার আবেদনের বিরুদ্ধে যেতে পারে। তাই আমি বিভিন্ন বিদেশী ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকদের অডিশন নিতে শুরু করি। সেখানেই লিনা অডিশনের জন্য সাইন আপ করেন। তিনি একজন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, যার শিকড় মধ্যপ্রাচ্যসহ পাঁচটি ভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে।
আরশি লিনা : আমি টিকটক করা শুরু করেছিলাম কারণ আমি একজন মডেল হতে চেয়েছিলাম। ফলে আমার বর্তমান ম্যানেজার আমাকে টিকটক এজেন্সিতে নিয়োগ দিয়েছিলো। সেখানে আমি এজেন্সির অন্যান্য মডেলদের অভিনয় করতে দেখতাম। তখন ভেবেছিলাম, আমি একদিন নিজে চেষ্টা করতে চাই। কিন্তু কখনো ভাবিনি, আমি এত তাড়াতাড়ি সুযোগ পাব।
কাওয়াওয়াদা : আমার কাছে অডিশনের সময় লিনা তার পরিচয় নিয়ে তার নিজের সংগ্রামের কথা বলেছিলেন। আমি কেন তাকে বেছে নিয়েছিলাম, তার একটি প্রধান কারণ ছিল, তার সংগ্রামের কথাগুলি। কারণ আমি কুর্দি জনগণ এবং সারিয়ার চারপাশের জটিল পরিস্থিতির মিল অনুভব করেছি।
আরশি : আমার জন্ম জাপানে। একজন জাপানি মায়ের ঘরে। কিন্তু লোকেরা এখনো আমাকে জিজ্ঞাসা করে ‘ তুমি কোন দেশের?’। স্কুলের অন্য শিক্ষার্থীরা আমাকে গাইজিন বা ‘বিদেশী’ বলে ডাকতো। আসলে আমি বহিরাগত কিনা এবং নিজেকে জাপানি বলা ঠিক হবে কিনা-এই ধারণা নিয়ে আমি লড়াই করতাম।
কাওয়াওয়াদা : আমি একজন ব্রিটিশ বাবা এবং জাপানি মা পেয়েছি। আমি যখন শিশু ছিলাম তখন আমাকে হাফুও বলা হত। লিনা এবং আমি যখন একসঙ্গে একটি রেস্তোরাঁয় যেতাম, লোকেরা হেসে বলতো, ‘ওহ, এখানে কিছু বিদেশী এসেছে!’ আবার সেই এক প্রশ্ন ‘আপনি কোথা থেকে এসেছেন?’ এবং আমি জানি লোকেরা কেবল আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতো। কিন্তু আমরা দুজনেই হঠাৎ বলে উঠি ‘আমাদের’ এবং ‘তাদের’ মধ্যে বিভেদ করে কেমন লাগছে!
আরো পড়ুন:
চলচ্চিত্রে অভিবাসী: পথে পথে বিভৎস বেদনার গল্পগাঁথা
আরশি : স্কুলে কেউ আমার প্রতি মনোযোগ দিবে, সেটা নিয়ে আমার তেমন কোনো আগ্রহ ছিলো না। আমি ছাত্র পরিষদে থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি একরকম অনুভব করেছি যে আমার সেটা করা উচিত ছিল না। তারপর যখন আমি ম্যাগাজিনের জন্য মডেলিং শুরু করি; তখন সবার প্রশংসা ও ভালোবাসা আমাকে আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। আমি তিন বছর ধরে হাইস্কুলের ছাত্র পরিষদে আছি! তখন আমি আমার নিজস্ব ধারণা প্রকাশ করিনি এবং শুধু মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখন আমি অন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শুনতে চাই, যারা আমার মতোই মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
কাওয়াওয়াদা : অন্যদের প্রতি যত্ন নেওয়ার মনোভাব আমাকে তার চরিত্র, সারিয়াকে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছে। এমনকি তার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই করার জন্য আমি কিছু স্ক্রিপ্টও পরিবর্তন করেছি। প্রথমে আমি তাকে তার বাবার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একটু বেশি বিদ্রোহী হিসাবে কল্পনা করেছি। কিন্তু লীনার সঙ্গে কথা বলার সময় মনে হয়েছে, তার পক্ষে আরো অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের সঙ্গে অভিনয় করাও তেমন কঠিন কিছু নয়। কেননা তিনি নিজের পরিবারের সঙ্গে কিভাবে মিলিত হয়েছেন, সেটা আমি দেখেছি। যার গল্প অনেক গভীর গল্প। এবং আমি লিনার থেকে ভালো কিছু দিকনির্দেশনাও পেয়েছি।
আরশি : পরিচালক আমাকে বলেছিলেন, সারিয়াকে কেবল একটা চরিত্র মনে করবেন না। ফলে আমি তাই করি। যদিও তার পরিবেশ এবং পরিস্থিতি আমার থেকে কিছুটা আলাদা। কিন্তু আমি মনে করি যে, জাপানি হিসেবে জীবনযাপন করতে ফারিয়ার যে চেষ্টা; আমি অনুভব করেছি সারিয়ার মতো একই দ্বন্দ্বে আমি নিজেও পড়েছি। যখন লোকেরা আমাকে আমার চেহারার উপর ভিত্তি করে বিদেশী বলে মনে করতো।
কাওয়াওয়াদা : এখনও আমি মনে করি, জাপানের বাইরে শিকড় আছে এমন অনেক লোকই সারিয়ার সঙ্গে অনেক অনুভূতিই শেয়ার করেছি। স্কুলে তারা জাপানিদের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং বাড়িতেও তারা পরিবারের সঙ্গে একইভাবে মানিয়ে নেয়। সবসময় তারা প্রকাশ্যে বিদ্রোহী হতে পারে না। তাদের সেই চিন্তারগুলো তারা নিজেদের কাছেই রাখে। এমন কিছু কথা যা তারা তাদের পিতামাতাকে বলতে চায়, কিন্তু পারে না। কীভাবে তাদের সেই চিন্তাগুলি শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরিত হয়, সেটাই ধীরে ধীরে উঠে আসে এই সিনেমাতে।
আরো পড়ুন:
চলচ্চিত্র ‘ইলেভেন ডেইজ ইন মে’ : ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা না করলে ঘুম আসে না ইসরায়েলি সেনাদের
সীমানা পুনর্বিবেচনা
আরশি (সারিয়া) জাপানে বেড়ে উঠেছে। এবং তিনি নিজেকে ভিন্নভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এজন্য তার বাবার সঙ্গে ফারিয়ার একপ্রকার দ্ব›দ্ব শুরু হয়। তার বাবা চান, সবসময় তার মেয়ে মনে রাখুক যে, তিনি একজন কুর্দি।
কাওয়াওয়াদা : সারিয়ার পরিবারে আরশির বাস্তব জীবনের বাবা, বোন এবং ভাই অভিনয় করেছেন। প্রত্যেককে অডিশনের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের কখনই তার আসল পরিবারকে নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিলো না। শেষ পর্যন্ত অডিশনে তাদের পারফর্ম দেখে আমরা তাদের নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। লিনার অভিনয়ের সময় যে, স্বাভাবিক অভিব্যক্তি এবং আবেগ তৈরি হয়েছিলো, সেটা তার বাবাকে দেখেই। কারণ তিনি অন্যান্য অভিনয়শিল্পীদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিলেন।
আরশি : অডিশনে আমি আমার পারফরম্যান্সে বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকেরা যেনো তাদের প্রকৃত উদ্বেগ প্রকাশ করে, সেই চেষ্টা করেছিলাম। সারিয়ার মতো চরিত্রে অভিনয় করতে পারাটা খুবই সম্মানের বিষয়। কারণ তিনি তেমনই একজন সাহসী নারী। সিনেমাটি করে আমার একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। এবং আমি জানি, এটি আমাকে ভবিষ্যতে আরো ভালো কাজ করতে সহায়তা করবে।
কাওয়াওয়াদা : লিনার সঙ্গে আমার প্রথম প্রজেক্টে কাজ করা আমার জন্য সত্যিই একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। জাপানে শরণার্থী মর্যাদা চাওয়া একটি কুর্দি পরিবারের এই গল্পটি বেশিরভাগ দর্শকের কাছেই দূরবর্তী মনে হতে পারে। তবে আমি নিশ্চিত যে, অনেক মানুষেরই তাদের শিকড়, পরিচয় এবং স্থানের সঙ্গে একইরকম লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আমি ভেবেছিলাম, প্রধান চরিত্রটিকে একজন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র বানিয়ে এটিকে চাকরি এবং পারিবারিক সমস্যা জড়িত একটি আগমনী গল্প হিসাবে দেখাবো। এটি এমন একটি গল্প হবে, যার সঙ্গে দর্শকরা নিজেদেরকে মেলাতে পারবেন। এটা অনেকটা তারুণ্য এবং বয়সের আগমনের গল্প। কিন্তু জাপানে কুর্দি শরণার্থীদের ইস্যুটি সবসময়ই পটভূমিতে থাকে। এই সমস্যাটি অনেকটা করোনা মহামারী এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের মতো। যা মানুষকে সীমান্তের দিকে ঠেলে দেয়।
জাতীয় সীমানাগুলি সম্ভবত কখনই অদৃশ্য হবে না। তবে আমি মনে করি, হৃদয়ের সেই সীমানাগুলিকে আমরা আমাদের ভিতরে নিয়ে যাই। আমি আশা করি যে, এই সিনেমাটি মানুষকে উৎসাহ দিবে, একটা পরিবর্তনের সূচনা করতে সহায়তা করবে। এটি কুর্দি সম্প্রদায়, সেইসঙ্গে লিনা ও তার পরিবার এবং জাপান ও ফ্রান্সের কর্মীদের প্রভাবকে একত্রিত করবে। এটি এমন একটি গল্প, যা আক্ষরিক অর্থে সীমানা অতিক্রম করে।
আরো পড়ুন:
‘দ্য মরিচঝাঁপি ফাইলস’: ১৯৭৯ সালে বাংলার ছোট্ট দ্বীপে হাজার মানুষ হত্যার কাহিনী
আরশি : মাঝে মাঝে আমার মনে হয় যদি আমাদের জাতীয় সীমানা না থাকতো ! তাহলে সর্বত্র যে যুদ্ধ এবং বৈষম্য আমরা দেখতে পাই তা অদৃশ্য হয়ে যেত। আপনি শুধু ‘হৃদয়ের সীমানা’ সম্পর্কে কথা বলেছেন, কিন্তু আমার জীবনে আমি এই সচেতনতা রাখতে চাই যে, আমরা সবাই শুধু মানুষ। এমনকি যদি আমাদের এখনো সেই সীমানা থাকে এবং আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে আসি তারপরও। সব ধরনের মানুষ আছে এখানে, যাদের ব্যাবগ্রাউন্ডও ভিন্ন। আমি চাই পৃথিবী এমন একটি জায়গা যেখানে আমরা একে অপরকে গ্রহণ করতে পারি। কেবলমাত্র অন্যরা আমাদের থেকে আলাদা বলে সীমানা বা রেখা টানার কী খুব বেশি দরকার আছে!
সূত্র: নিপ্পন