বৃহস্পতিবার, 21 নভেম্বর, 2024

চলচ্চিত্র ‘ইলেভেন ডেইজ ইন মে’ : ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা না করলে ঘুম আসে না ইসরায়েলি সেনাদের

কেউ সমালোচনা করলে তার বিরুদ্ধে লড়াই করে ইসরায়েল, সেটা প্রত্যক্ষভাবে হোক কিংবা ইউরোপে তাদের লবি গ্রুপের মাধ্যমে হোক

একটি ছেলে যে সার্জিও রামোস এবং রিয়াল মাদ্রিদের সবকিছুকেই পছন্দ করতো। একটি মেয়ে যে সাংবাদিক হতে চেয়েছিলো। সাত বছর বয়সী একটি শিশুর মানসিকতা এমন ছিলো যে, সে সর্বদা সবধরনের খাবারের সঙ্গে টমেটো খেতে পছন্দ করতো। একটি শিশু যে, দরজার আড়ালে লুকোচুরি খেলতে খেলতে কখনোই ক্লান্ত হয় না। সাত মাস বয়সী একটি ছেলে সবেমাত্র হামাগুড়ি দিতে শিখেছে, তার ভাই-বোনরা তাকে চুমু দিচ্ছিলো।

গত মে মাসে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের ১১ দিনের বোমা হামলায় নিহত ৬৭ জন শিশুর মধ্যে এরাও রয়েছে। কেউ কেউ ঘরে ঘুমের মধ্যে সহিংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। অন্যরা বাড়িতে বা আশেপাশে থাকাকালীন নিহত হয়েছে। যখন তারা খেলাধুলা বা দৌড়াদৌড়িতে ব্যস্ত ছিলো।

অধিকৃত পূর্ব-জেরুজালেম নিয়ে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হামাসের সামরিক ক্ষমতার ক্ষতি করতে চাইছে। কিন্তু বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন এবং সরকার, শিশু হতাহতের ক্রমবর্ধমান হার বৃদ্ধির কারণে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে-যাদের বেশিরভাগই ছিলো ফিলিস্তিন।

যুক্তরাজ্য থেকে হামলার খবর দেখার পর, বিখ্যাত পরিচালক মাইকেল উইন্টারবটম হতাহতের শিকার শিশুদের স্মরণে এবং ইসরায়েলের নৃশংস হত্যাকাণ্ড তুলে ধরতে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এর জন্যে তিনি ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ সাওয়াফের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মোহাম্মদ সাওয়াফ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করেন। চলচ্চিত্রটির নাম রাখা হয় ইলেভেন ডেইজ ইন মে

সাওয়াফ উইন্টারবটমকে প্রায় ১০০ ঘণ্টার ফুটেজ পাঠিয়ে দেন। উইন্টারবটম লন্ডনের একটি অন্ধকার কক্ষে তথ্যচিত্রটি সম্পাদনা করেছিলেন, যেটার অ্যাখ্যান লিখেছিলেন কেট উইন্সলেট । প্রায় ৮০মিনিটের চলচ্চিত্রটি দেখলে দর্শকরা আজীবনের বেদনার নিছক মুহূর্তের সাক্ষী হতে পারবেন।

আরো পড়ুন : প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ফ্লি: স্বদেশ আর ভিটেমাটি হারানো এক শরণার্থীর ত্যক্ত স্মৃতিকথা

হতাহতের মধ্যে কারো কারো বয়স এতই কম ছিলো যে, তাদের ভাইবোনরা তাদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে অস্থির হয়ে যায় এবং এলোমেলোভাবে কথা বলতে শুরু করে। তাদের মা-বাবারা জীবিত সন্তানদের সামনে নিজেদের সামলে রাখলেও দরজার আড়ালে একাকি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ক্যামেরার সামনে শিশুদের জিনিসগুলি যেমন-হুডি, স্কুল সার্টিফিকেট, তাদের জমানো টাকা-যেটার দাম নেকলেসের চেয়েও বেশি, সেগুলো সব যত্ন সহকারে রাখা হয়।

আমরা মোবাইল ফোনের ছবি এবং ভিডিও দেখতে পাবো, কার্টুনের মতো স্ন্যাপচ্যাট ফিল্টার দিয়ে দেখানো হয়েছে। যেটার মাধ্যমে ওই সব শিশুদের সুখী জীবনের পূর্ণ রুপ দেখতে পাওয়া যাবে। যেটা যুদ্ধের ভয়াবহতম বাস্তবতার প্রমাণ দেয়। রক্তাক্ত এবং টুকরো টুকরো মৃতদেহ সেই সুখী জীবনের বিপরীত এবং ভয়ঙ্কর এক চিত্র, চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আমাদের সামনে তুলে ধরে।

সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা উইন্টারবটম এবং সাওয়াফের সঙ্গে তাদের চলচ্চিত্র ইলেভেন ডেইজ ইন মে নিয়ে কথা বলেছেন। নিম্নে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো:

আল জাজিরা: পশ্চিমা দেশগুলির কিছু পরিচালক গাজার ঘটনাগুলি মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছেন, যেখানে অনেক ট্রাজেডি আছে। এ বিষয়ে আপনি কী মনে করেন?

মাইকেল উইন্টারবটম: আমি জানি না, ঠিক কীভাবে এটা প্রকাশ করবো! সবার মতো আমিও যখন পুরো ঘটনাটা খবরে দেখি, তখন একেবারেই হতবাক হয়ে যাই। এর আগেও হয়তো এ ধরনের ঘটনা অনেক ঘটেছে, যেটা আমরা অহরহ খবরে দেখতে পেয়েছি। কিন্তু কিছুদিন পর আবার আমরা সেগুলো ভুলেও যাই। আমার মনে হয, কোথাও না কোথাও ভুলে যাওয়ার কারণেই আবার এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে। আমরা যদি এগুলো মনে রাখতাম, যে এধরনের পরিস্থিতিতে যারা পড়ে, সেসময় তাদের অনুভূতি কেমন থাকে, তাহলে হয়তো এই ঘটনাগুলো পুনরায় ঘটারর সম্ভাবনা একটু কম থাকে।

মোহাম্মদ সাওয়াফ: আবার হতে পারে, ইসরায়েল তাদের বিষয়ে কোনো সমালোচনা নিতে পারে না। ফলে তারা যে কোনো সমালোচনার প্রতি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখায়। কেউ সমালোচনা করলে তার বিরুদ্ধে লড়াই করে ইসরায়েল, সেটা প্রত্যক্ষভাবে হোক কিংবা ইউরোপে তাদের লবি গ্রুপের মাধ্যমে হোক।

চলচ্চিত্রের নির্মাতা এবং প্রভাবশালীদের কেউ কেউ ইসরায়েলি বর্ণনা, ফিলিস্তিনের ভাবমূর্তি বিকৃত এবং তাদের বিরুদ্ধে একটি নেতিবাচক স্টেরিওটাইপ প্রতিষ্ঠার দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে, বিশেষ করে সেটা গাজায়।

আল জাজিরা: আপনি কী শিশুদের ক্ষতির বিষয়ে কোনো কিছু থেকে বিশেষভাবে প্ররোচিত হয়েছিলেন?

উইন্টারবটম: একজন বাবার কাছে সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো, সন্তানকে চোখের সামনে মরতে দেখা। এমনকি সন্তান হারানোর বিষয়টা কল্পনা করাটাই দারুন যন্ত্রণার। গাজার মানুষগুলোর চোখের সামনে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে এবং বার বার ঘটছে। চোখের সামনে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটলে মনে হয়, বাবা বা একজন অভিভাবক হিসেবে হয়তো আমরা সন্তানদের দেখাশোনো বা রক্ষা করতে পারছি না। তাই আমাদের এদিকে নজর দেওয়া জরুরি।

চলচ্চিত্র নির্মাতা মাইকেল উইন্টারবটম। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্রে আপনারা একটার পর একটা শিশুর জীবনের গল্প দেখতে পাবেন। একটু একটু করে তাদের জানতে পারবেন। আমরা আশা করি, মানুষ খুব দ্রুত বুঝতে পারবে, বোমা হামলা সব সমস্যার সমাধান নয়। যতো বেশি মানুষ এটি অনুভব করবে, এধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা তত কম।

আল জাজিরা: আপনার চলচ্চিত্রে প্রাথমিক পর্যালোচনায়, ইতোমধ্যেই আপনাকে একজন ইহুদি-বিরোধী হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনি কী বা আপনার অনুভুতি কী?

উইন্টারবটম: আমি তো তেমন কিছু দেখি না। এটা একদমই ভুল ধারণা। গাজার মানুষের সঙ্গে কী ঘটেছে সেটা নিয়েই আমাদের চলচ্চিত্র। ফলে আমি ইহুদি বিরোধী এই ধারণাটি একেবারেই হাস্যকর।

আল জাজিরা: যে সময় ইউরোপে একটি বিশাল সংঘর্ষ চলছে, তখন মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আপনি একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। চলচ্চিত্রে বাস্তব একটি সহিংস হত্যাকান্ডকে তুলে ধরা হয়েছে। আবার আরেকটি নৃশংস ঘটনা সেই সময় ঘটছে। এই দুটি ঘটনার শিকার যারা হয়েছেন তাদের প্রতিক্রিয়া ভীষণ যন্ত্রণার। তো এই দুটি বিষয়কে আমরা কীভাবে তুলনা করতে পারি বা আদৌ এটা আমাদের তুলনা করা উচিত কিনা, এ প্রসঙ্গে আপনি কী বলবেন?

উইন্টারবটম: প্রতিটা বাবা-মা বা পরিবারের কাছে সন্তান হারানোর যন্ত্রণা একইরকম, সেটা ইউক্রেনেই হোক বা গাজায়। হয়তো সেটার প্রতিক্রিয়া ভিন্ন হতে পারে। ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়া খুব বেশি হয়েছে। এটি (আক্রমণ) বন্ধ করা বা কমানোর জন্য আমাদের কিছু করা উচিত। যেটা ঘটছে সেটা বেশ ভয়ানক এবং যারা এটা ঘটাচ্ছে তারা ভূল করছে। যাদের উপর বোমা ফেলা হচ্ছে তাদের সাহায্য করার জন্য আমাদের সাধ্যমতো এগিয়ে যাওয়া উচিত।

গাজায় বা ইয়েমেনে যা ঘটেছে সেটার জন্য আমাদের এই প্রতিক্রিয়া, এটা মোটেও সত্য নয়। সর্বোপরি আমরা নিজেদের উপর বোমা হামলার একটি অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ইউক্রেনে যা ঘটেছে, সে সম্পর্কে জনগণের যে প্রতিক্রিয়া বা অনুভূতি, সেটা গাজা বা অন্যান্য জায়গার মানুষদের মতো আমাদেরও ভাবতে বাধ্য করে যে, গোটা বিশ্বের অন্যান্য সংঘাতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে সবারই ভাবা বা সচেতন হওয়া উচিত।

সাওয়াফ: ফিলিস্তিনিদের ইউক্রেনীয় জনগণের প্রতি সহানুভূতি দেখানো সত্ত্বেও ফিলিস্তিন এবং ইউক্রেনে যা যা ঘটছে তার তুলনা করতে গেলেই সমস্যায় পড়তে হয়। যারা এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন, অন্যের ব্যথা অনুভব করা তাদের জন্য একটু সহজ।

গাজা এবং ফিলিস্তিনের জনগণ বহু বছর ধরেই যুদ্ধ এবং ক্ষতির যন্ত্রণা সহ্য করে আসছে। এখানে পার্থক্যের বিষয় হলো-ইউক্রেন তার পাশে দাাঁড়ানোর, তাকে সমর্থন করার, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল, শরণার্থীদের গ্রহণ করা এবং নিরাপত্তা দেওয়ার মতো কাউকে খুঁজে পেয়েছে।

আবার এরা অনেক নিপীড়ক দেশও দেখতে পেয়েছে। ফলে রাশিয়ার উপর আরোপ করা হয়েছে। যেখানে দুর্ভাগ্যবশত গাজা ১৬ বছর ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে এবং তারা পালানোর জন্য কোনো নিরাপদ জায়গাও পায়নি। ইসরায়েলের মতো অন্য অনেক দেশও ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি চোখ-কান বন্ধ করে রেখেছে। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারা কখনোই নিরুৎসাহিত হয় না। ফলে তারা যুদ্ধের পর যুদ্ধ করে থাকে। এতে অনেকেই মনে করে যে, তাদেরকে নিকৃষ্ট জাতি হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং তাদের রক্ত অন্যদের তুলনায় সস্তা।

আরো পড়ুন : চলচ্চিত্রে অভিবাসী: পথে পথে বিভৎস বেদনার গল্পগাঁথা

আল জাজিরা: এই ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার পেছনে কী কারণ রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

উইন্টারবটম: এই মানুষগুলোর সঙ্গে পরিচিত হলে, তাদের কষ্টগুলো অনুভব করতে পারলেই; তাদের প্রতি আমরা যত্নবান হতে পারবো। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক মানবীয় প্রবৃত্তি। তারা আক্রমণের শিকার হোক, সেটা আমরা কখনোই চাই না। আবার যদি এমন হয় যে, আমরা তাদের সম্পর্কে ভালো জানি না কিন্তু আক্রমণকারীদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানি, তাহলে বিষয়টি অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে।

ইউক্রেনকে নিয়ে প্রায় সব প্রতিবেদনই হয়েছে, তাদের উপর করা বোমা হামলার দৃষ্টিকোণ থেকে। মিডিয়া এই মানুষগুলো পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। এর আগে সিরিয়াতে একটি ভালো কাজ করেছিলো মিডিয়া।

কিন্তু গাজায় আমরা পরিবার কিংবা শিশুদের স্বাভাবিক জীবন দেখতে পাই না। তারা হয়তো নিজেরাও জানে না যে, আমরা তাদের সম্পর্কে এত ভালো জানি। এটাই হলো চলচ্চিত্রটির ধারণা-ছোট্ট একটা উপায়ে আমরা হতাহত বাচ্চাদের পরিবারগুলো সম্পর্কে জানতে পারি। সবকিছু জানার পর বোঝা যাবে এই হত্যার ঘটনার ট্রাজেডি কতোটা জোরালো ও ভয়াবহ। আশা করি চলচ্চিত্রটি দেখে দর্শক তাদের পরিবারের দুঃখ এবং ক্ষতি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং সচেতন হতে পারবে।

আল জাজিরা: এই চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেছেন, আপনি কীভাবে তাদের এই মর্মান্তিক এবং ভয়ঙ্কর ঘটনায় কাজ করতে রাজি করালেন? তারা কী এই কাজটা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছিলো?

সাওয়াফ: আমরা তাদের ক্ষতকে পুনরায় জাগিয়ে তুলেছি। আমরা তাদের বলেছিলাম যে, তাদের সন্তানরা শুধুমাত্র সংবাদ বুলেটিনের গণনা করা সংখ্যা নয়। প্রত্যেকের জানা উচিত, তাদের সন্তানরাও বিশে^র অন্যান্য শিশুদের মতোই সুখী জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলো।

আমরা প্রত্যেকের পরিবারের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিলাম। আমরা তাদের সঙ্গে দেখা করেছি, বসেছি এবং আমাদের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করেছি। যেটা তাদের ক্যামেরার সামনে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে সহায়তা করেছিলো।

আল জাজিরা: চলচ্চিত্রে আপনি হামলার পরপরই মৃত শিশুদের ছবি দেখান এবং মৃতদেহ শবযাত্রায় নেওয়ার একটি দৃশ্য উপস্থাপন করেছেন। কী কারণে এই বেদনাদায়ক দৃশ্য দেখানোর সিদ্ধান্ত নিলেন?

উইন্টারবটম: অনেক আর্কাইভ আছে যেখানে শিশুদের সুখী ও জীবিত অবস্থা দেখায়। নিহত হওয়ার পর তাদের পরিবার তাদের কাছে সেই সুখী জীবনের ছবি, জিনিসপত্র সাওয়াফকে দিয়েছিলো। তারা চেয়েছিলো এগুলো চলচ্চিত্রে অন্তর্ভূক্ত করা হোক। আমরা তাদের এগুলোর জন্য জিজ্ঞাসা করেছিলাম বা বুঝিয়েছিলাম এমন কোনো ব্যাপার নেই।

আরো পড়ুন : প্রামাণ্যচিত্রে ১০০ বছর আগে এক বাংলাদেশী শ্রমিকের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসিত হওয়ার গল্প

আল জাজিরা: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৬১ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলে একজন ফিলিস্তিনি নাগরিক ও তার মেয়ে এবং দুইজন থাই শ্রমিকসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন। চলচ্চিত্রটির একটি সমালোচনা হতে পারে এটা। এটার প্রতিক্রিয়াকে আপনি কীভাবে দেখবেন?

উইন্টারবটম: আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এই চলচ্চিত্রটি গাজার মানুষের জন্য নির্মাণ করা। আমি মনে করি, এটি বৈধ। একই সময়ে সবকিছু নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে, এমনটা আমি মনে করি না। চলচ্চিত্রটি মূলত নির্মাণ করা হয়েছে গাজায় বোমা হামলার পর যাদের সন্তানরা নিহত হয়েছেন।

আল জাজিরা: আপনি কেনো মনে করেন যে, রাশিয়া বা সিরিয়ার তুলনায় ইসরায়েলি নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচার করার জন্য বিশে^র অন্যান্য দেশগুলোর রাজনীতিবিদদের থেকে কম আহ্বান এসেছে?

সাওয়াফ: ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল কর্তৃক পরিচালিত হামলা আইন লঙ্ঘন এবং অপরাধ, এটা একদম পরিষ্কার। যেটা কিনা মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘের প্রতিবেদনগুলি দ্বার নথিভুক্ত। এটা ইসরায়েলের প্রতি নিন্দা পোষণ করে। যেসব পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তাদের মধ্যে অনেকেই বলেছে যে, ৭৪ বছর ধরে তারা এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হচ্ছে। এটা সবাই দেখছে কিন্তু কিছুই করেনি কিংবা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

আল জাজিরায় প্রকাশিত আনিয়ালা সফদারের নেয়া সাক্ষাৎকারটি ভাষান্তর করেছেন রীতা জান্নাত। তিনি চলচ্চিত্র বিষয়ক জার্নাল ম্যাজিক লণ্ঠন এর সদস্য এবং সাংবাদিক

Get in Touch

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related Articles

অভিবাসীর সঙ্গে থাকুন

10,504FansLike
2FollowersFollow
96SubscribersSubscribe

সাম্প্রতিক ঘটনা